এনআরসি কাণ্ডের জেরে আসামে ৫ বাঙালি হত্যার প্রতিবাদে আজ পথে নামছে তৃণমূল। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ মিছিল করা হবে। সর্বভারতীয় যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আজ শুক্রবার যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যাণ্ড থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মহামিছিলের আয়োজন করেছেন তৃণমূল নেতারা। মিছিলে যোগ দেবেন হাজার হাজার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক।
এদিকে বিজেপি শাসিত আসামে বাঙালি হত্যার প্রতিবাদে যখন পথে নেমে আন্দোলন কর্মসূচী সংঘটিত করছে তৃণমূল, তখন মুখে কুলুপ বাম-রামের। পথে নেমে কর্মসূচী নেওয়া তো দূরের কথা, ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াতেও একটা নিন্দা বার্তাও দিতে পারলেন না সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও সিপিএম নেতারা। বিজেপির অবস্থাও একই। দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়ের মতো বিজেপি নেতারা কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন। আদতে বাম-রাম এই দুই রাজনৈতিক দল যে ঘোরতর বাঙালি বিরোধী দল তা এই ঘটনায় আরও একবার প্রমানিত হয়ে গেল।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অসমের তিনসুকিয়া জেলায় ৫ যুবক খুন হন। মৃতদের নাম শ্যামলাল বিশ্বাস (৬০), অনন্ত বিশ্বাস (১৮), অবিনাশ বিশ্বাস (২৩), সুবল দাস (৬০) ও ধনঞ্জয় নমশূদ্র (২৩)। জানা গিয়েছে, অসমের তিনসুকিয়া জেলার সাদিয়ায় একটি দোকানে বসেছিলেন ৬ যুবক। তখনই সেনার পোশাকে সেখানে হাজির হয় কয়েকজন বন্দুকবাজ। এরপর যুবকদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রহ্মপুত্র নদীর চড়ে। সেখানে তাঁদের লাইনে বসিয়ে গুলি করা হয়।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ঘটনার প্রতিবাদে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তীব্র নিন্দা জানিয়ে টুইটে লিখেছেন, ‘তিনসুকিয়ায় নৃশংস আক্রমণের নিন্দা করছি। এটা কি নাগরিকপঞ্জীর ফল? নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর কোনও ভাষা নেই। দোষীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে’। সেই সময়েই জানিয়ে দেন, আজ শুক্রবার রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করবে তৃণমূল। এই টুইটেই লিখছেন, ‘ আসামের এই মর্মান্তিক হত্যার প্রতিবাদে রাজ্যের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ-সহ শিলিগুড়ি ও কলকাতাতেও আজ ২ নভেম্বর প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করবে তৃণমূল।’
ঘটনা ঘটামাত্র মমতার জোরালো প্রতিবাদে মনে জোর পেয়েছেন এনআরসি আতঙ্কে দিন কাটানো আসামের বাঙালিরা। একইভাবে বাম-রামের আশ্চর্য নীরাবতায় ক্ষুব্ধ তাঁরা। আসামের বাঙালিদের দাবি, এই মিথ্যা ‘আচ্ছে দিন’ নয়, প্রকৃত উন্নয়ন চাই।