দু’দিন আগেই আরবিআই-এর ডেপুটি গভর্নর প্রকাশ্যে বলেছিলেন, দেশের অর্থনীতি নিয়ে টি-টোয়েন্টি খেলছে কেন্দ্রীয় সরকার। ঠিক তার দু’দিন পরই দেশবাসীর পয়সায় নতুন করে এক টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমে পড়েছে মোদীর সরকার। উপলক্ষ্য, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মদিন।
কী হচ্ছে জন্মদিনে? ২৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে লৌহমানব বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি। নাম ইউনিটি স্ট্যাচু। এসেছে ‘ইউনিটি ডে’ বা ‘একতা দিবস’ মানার ফরমান। শুধু তাই নয়, আজ এই মূর্তি উন্মোচন উপলক্ষ্যে বিজেপির তরফে দেশের সমস্ত প্রথম সারির সংবাদপত্রের প্রথম পাতা জুড়ে দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞাপন। লক্ষ-কোটি টাকা খরচের সেই বিজ্ঞাপনে প্যাটেলের মূর্তির পাশে হাসি মুখে মোদী। এসব দেখে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এটাই কী তবে ‘আচ্ছে দিন’? দেশবাসীর থেকে আদায় করা করের টাকার এমন শ্রাদ্ধের বহর দেখে মনে হতে বাধ্য, ডেপুটি গভর্নর ভুল কিছু বলেননি।
মোদী সরকারের আজকের কর্মসূচী দেখে এটাও মনে হতে বাধ্য, দেশে কোনও সংকট নেই। সমস্ত প্রতিষ্ঠান চলছে তেল খাওয়া মেশিনের মসৃণতায়। অথচ বাস্তব ভিন্ন। মোদী যখন ‘ইউনিটি স্ট্যচূ’ উদ্বোধন করছেন, পালন করছেন ‘ইউনিটি ডে’, ঠিক তখনই এনআরসি নিয়ে উত্তাল সারা দেশ। কোথায় ইউনিটি? পেট্রোপণ্যের আস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের পকেটে টান পড়েছে। বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। কোথায় মোদীর ইউনিটি? সিবিআইয়ের অন্দরে কাজিয়া তুঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না গণ্ডগোল। সিবিআইয়ের কর্তাব্যক্তিরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। কোথায় ইউনিটি? আসলে মোদীর এই ইউনিটিও তাঁর ‘আচ্ছে দিন’-এর মতোই ডুমুরের ফুল।
আসলে মূর্তির রাজনীতি করছেন মোদী। নিজের ঢাক নিজে পেটাচ্ছেন তিনি। দেশবাসী দেখছেন প্রধানমন্ত্রী হাসি হাসি মুখে সর্দার প্যাটেলের ১৮২ মিটার উচ্চতার ইউনিটি মূর্তির উদ্বোধন করছেন, আর ধীরে ধীরে হেলে পড়ছে দেশের ইউনিটি। এসব দেখে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। রাগে ক্ষোভে ফুটছেন তাঁরা। হয়তো অপেক্ষা করছেন কখন আসবে সেই শিশু। যে এসবের মধ্যেও আঙুল তুলে জিজ্ঞেস করবে, ‘রাজা তোর ইউনিটি কোথায়’?