আসল নাম প্রবোধচন্দ্র দে। তবে মান্না দে নামেই তাঁর নামডাক। অবিসংবিদিতভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীত শিল্পীদের একজন তিনি। তাঁর গান গান আমাদের জীবনের প্রতিটি অনুভূতির সাথে যুক্ত। হিন্দি, বাংলা, মারাঠি, গুজরাটি-সহ অজস্র ভাষায় কাওয়ালি ,গজল ,ক্লাসিকাল,সেমিক্লাসিক্যাল,আধুনিক,রবীন্দ্র সঙ্গীত,এমনকি রক এন্ড রোলে তিনি ছিলেন সমান সাবলীল। সঙ্গীত জীবনে তিনি সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন। কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে’র কাছেই তাঁর সঙ্গীতে হাতেখড়ি। বিদ্যাসাগর কলেজে পড়াকালীন পর পর তিন বার তিনি ইন্টার কলেজ সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৪২ সালে মান্না দে কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দের সঙ্গে মুম্বই চলে আসেন।এখান থেকেই তার কর্ম জীবন শুরু হয়। কর্ম জীবন শুরু হলেও সঙ্গীত শিক্ষা চলতে থাকে উস্তাদ আমান আলী খান এবং উস্তাদ আব্দুল রহমান খানের কাছে।
১৯৪৩ সালে কৃষ্ণ চন্দ্র দে এর নির্দেশনায় ‘তাম্মানা’ ছবিতে তিনি প্রথম গান করেন। তার গান সেই সময় এতো জনপ্রিয় হয় যে তিনি ১৯৫০ সালে শচীন দেব বর্মনের নির্দেশনায় ‘মশাল’ ছবিতে একক গান গাওয়ার সুযোগ পান। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। একের পর এক বাংলা ও হিন্দি এমনকি মারাঠি ছবিতেও তিনি গান গাওয়া শুরু করেন,শুধু তাই নয় এর সাথে সাথে তিনি সঙ্গীত পরিচালনার ও কাজ করেন। তার গাওয়া এবং নির্দেশনায় সবকটি গানই বিশাল জনপ্রিয়তা লাভ করে। সঙ্গীত ভুবনে তার অসামান্য অবদানের জন্য ভারত সরকার ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৫ সালে পদ্মবিভূষণ এবং ২০০৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে সম্মাননায় ভূষিত করে। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে রাজ্যের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণ প্রদান করে। মান্না দে পদ্মশ্রী এবং পদ্মবিভূষণ খেতাব-সহ অসংখ্য খেতাব অর্জন করেছেন।
মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে ট্যুইট করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখেছেন, “প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পী মান্না দের মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই প্রণাম।”