মহালয়ার সন্ধ্যায় নজরুল মঞ্চে তারকা সমাবেশ। তাই বলে আড়ম্বর নেই। ছিমছাম অনুষ্ঠানে মন ছোঁয় আবেগ। রুপং দেহি, জয়ং দেহি। টুকরো স্মৃতিচারণ, গান, সংবর্ধনার সঙ্গে ‘জাগো বাংলা’ উৎসব সংখ্যার প্রকাশ অনুষ্ঠান। কেন্দ্রবিন্দুতে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘জাগো বাংলা’র উৎসব সংখ্যার প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রতিবছর উপস্থিত থাকেন সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। অসুস্থতার কারণে এবছর থাকতে পারেননি। ঘরোয়া মমতা তাঁকেও ভোলেননি। বললেন, ‘ওঁকে খুব মিস করছি। শারীরিক ভাবে আসতে না পারলেও জানি ওঁর মন আজ এখানেই পড়ে আছে’। উপস্থিত ছিলেন স্বর্ণযুগের সঙ্গীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, ‘জীবন্ত কিংবদন্তী’। সন্ধ্যার দীর্ঘায়ু কামনা করেন তিনি। বলেন, ‘আপনারা প্রতি বছর এসে মহালয়ার কিছু ঘটনা মনে করিয়ে দেবেন’। দিলেনও। সেই সময়ের মহালয়া নিয়ে বিস্তারিত ভাবে স্মৃতিচারণ করেন সন্ধ্যাদেবী ও অসীমা মুখোপাধ্যায়। একসঙ্গে গাইলেন ‘রূপং দেহি’। উপস্থিত দর্শকেরা উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে অভিবাদন জানান দুই বিদগ্ধ ও প্রবীণ শিল্পীকে। সঙ্গীত পরিবেশন করেন শান্তনু রায়চৌধুরী, গৌতম ঘোষ, সৌমিত্র রায়। নৃত্য পরিবেশন করেন কাউন্সিলার অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সম্প্রদায়।
‘জাগো বাংলা’র উৎসব সংখ্যা প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘খুব খারাপ লাগে যখন দেখি কিছু ভুঁইফোঁড় নেতা, যাঁদের জীবনে না আছে কোনও সংগ্রাম, না আছে কোনও আদর্শ, তারা যখন ইনিয়ে-বিনিয়ে কুৎসা করে, চোখ রাঙায়, গুণ্ডা সর্দারদের মতো কথা বলে, তখন মনে হয়, রাজনৈতিক সৌজন্যের হাতেখড়ির পাঠ এঁদের হয়নি। এরা চালাবে দেশ? এরা হবে দেশের নেতা? ভাবতে অবাক লাগে’।
মমতার লেখা ৬ টি গান নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘রৌদ্রছায়া’ নামে একটি অ্যালবামও। ‘জাগো বাংলা’র উৎসব সংখ্যায় মমতা ‘হাঁটতে হাঁটতে’ শিরোনামে একটি কবিতা লিখেছেন। এছাড়া কাণ্ডারীর কলমে ‘সৌজন্য’ নামে একটি প্রবন্ধও লিখেছেন। প্রয়াত অটলবিহারি বাজপেয়ী সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন। লিখেছেন, ‘সৌজন্য যেন অস্বাভাবিকভাবে হারিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক আদর্শে মতভেদ থাকলেও ব্যক্তি-কুৎসা অথবা ব্যক্তি-আক্রমণ করতে নেই। ময়দানের বিরোধিতা, রাজনীতির সীমার মধ্যেই থাকা উচিৎ। এর নাম সৌজন্য, ভদ্রতা।