১৯৫২ সালে দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুর এলাকায় পথ চলা শুরু করে সুরুচি সঙ্ঘের পুজো। তারপর ধীরে ধীরে লাইমলাইটে আসা শুরু হয় নয়া শতাব্দীর গোড়া থেকে। দর্শনার্থীদের বাহবা কুড়িয়েছে অনেক আগেই। মানুষের অবিরাম স্রোত নিউ আলিপুরের এই পুজোকে তুলে এনেছে কলকাতার ‘হেভিওয়েট’ পুজোর তালিকার শীর্ষে। তাই যাদের মাধ্যমে এসেছে এই সাফল্য, এবার সেই দর্শকদের জন্য দায়িত্বশীলতার পরিচয় রাখছেন আয়োজকরা।
পুজোর থিমের পাশাপাশি, দর্শকদের সুরক্ষার দিকে এবছর সমানভাবে নজর দিয়েছে সুরুচি সঙ্ঘ। আগত দর্শনার্থীদের এবার ‘সুরক্ষা বিমা যোজনা’-র আওতায় আনছে তারা। শহরে এই প্রথমবার দর্শকরাও থাকছেন ২৫ লক্ষ টাকা বিমার আওতায়।
পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা তথা পূর্ত, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কথায়, আমাদের সেরা বানিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের সুরক্ষার দায়িত্বও আমাদের। তাই এই বিমার উদ্যোগ। তিনি আরও জানিয়েছেন, গোটা মণ্ডপটি থাকছে আরও ২৫ লক্ষ টাকার সুরক্ষা বিমার আওতায়।
মা ও মাটি। দুটি আলাদা শব্দ, তবে একে অপরের পরিপূরক। শিউলির গন্ধে ভরা উৎসবের এই বাতাবরণে মাটি দিয়ে তৈরি মণ্ডপে মা’কে আবাহনের আয়োজন তাই সেরে ফেলেছে সুরুচি সঙ্ঘ। মাটির স্নিগ্ধতা আর মায়ের স্নেহ স্পর্শের সেই সুখানুভূতিটা ঠিক কেমন হবে, গতকাল, সোমবার মহালয়ার সকালেই আগাম জানান দিয়েছেন মহাপুজোর আয়োজকরা।
সুরুচি সঙ্ঘের এবারের ‘ভাবনা সঙ্গীত’ (থিম সং) অ্যালবাম আকারে মুক্তি পেয়েছে গতকালই। এই নিয়ে টানা ১১ বছর ধরে পুজোর থিম সং প্রকাশ পাচ্ছে সুরুচির তরফে। ‘জয়ো মা, জয়ো দুর্গা’- শীর্ষক এই অ্যালবামে বাংলার মা-মাটি-মানুষের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা এবং সুরে কণ্ঠ দিয়েছেন গায়ক-মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন এবং লোপামুদ্রা মিত্র। মমতা লিখেছেন- ‘তুমি দুর্গা, তুমি কালী/ তুমিই ঘরে মোদের মা/ তোমায় ছাড়া আসে না উৎসব/ তুমিই মোদের দুর্গা মা…’ গানের প্রতিটি কলিজুড়েই আগমনীর বার্তা।
সুরুচির সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ বিশ্বাসের কথায়, পুজোর ভাবনা সঙ্গীত ২০১৫ সাল থেকে লিখছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়ে টানা ৪ বছর। তাঁর সেই লেখনী সুরারোপিত হওয়ার পর থেকে ইউটিউবে নন-ফিল্মি বাংলা যে কোনও গানের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এবারও তেমন কোনও রেকর্ড হবে বলেই দাবি আয়োজকদের।