অক্টোবর মাস পড়ে গেছে। বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। এখন কেনাকাটার পালা। কিন্তু তার আগেই পকেটে টান। হেঁশেলে আগুন। তেলের দাম সেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। রান্নার গ্যাস হাজার ছুঁইছুই। পুজোর আনন্দ মাটি করে তেল আর রান্নার গ্যাসের এই জোড়া ধাক্কায় নাভিশ্বাস আমজনতার।
বাঙালির হেঁশেলে সোজা ধাক্কা দিয়ে রান্নার গ্যাসের সিলিণ্ডারের দাম ছুঁল ৯০৭ টাকা। ভর্তুকির সিলিণ্ডার কিনতে হলেও গোড়ায় ওই টাকাই পকেট থেকে বের করতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা আইওসি-র দাবি, ভর্তুকিযুক্ত সিলিণ্ডারের দাম একই আছে। ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, নিম্নবিত্তদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বলা যোজনার প্রথম গ্যাস সিলিণ্ডারটি বিনামূল্যে দেওয়া হয়। সেই সিলিণ্ডারের গ্যাস ফুরনোর পর মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ কীভাবে সিলিন্ডার ভরবেন?
রান্নার গ্যাসের সিলিণ্ডারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মৌন প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস। নেতা পবন খেরা নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ‘আচ্ছে দিন’-এর মরীচিকা আমজনতার স্বপ্নকে চূর্ণ করেছে। যে হারে তেল-গ্যাসের দাম বাড়ছে তা মধ্যবিত্তের বাজেটে ধাক্কা দিয়েছে। বিজেপি আসলে কর চাপিয়ে মধ্যবিত্তের পকেট কাটছে। এই নিয়ে কংগ্রেস এদিন নতুন নাম দিয়েছে বিজেপি-র। তাঁদের বক্তব্য – বিজেপি-র অর্থ হল – ‘বহুত জাদা প্রাইস’।
অন্যদিকে, জ্বালানী তেলের দামও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। তেল কোম্পানিগুলি লিটার প্রতি পেট্রোলে ২৪ পয়সা এবং ডিজেলে ৩০ পয়সা দাম বাড়িয়েছে। আজ মঙ্গলবার ১২ পয়সা বেড়ে পেট্রোলের দাম হয়েছে ৮৫.৬৫ টাকা। ডিজেল ১৬ পয়সা বেড়ে ৭৭.১০ টাকা। দুটি পেট্রোপণ্যের দামই ছুঁয়েছে সর্বকালীন রেকর্ড। পণ্য পরিবহণের খরচ বাড়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা চেপে বসেছে।
তাঁর ওপর উদ্বেগ বাড়িয়ে ডলারে টাকার দাম আরও কমেছে। ৪৩ পয়সা বেড়ে এক ডলার ছুঁয়েছে ৭২.৯১ টাকা। ফলে বিদেশ থেকে তেল কেনার খরচ আরও বাড়ার আশঙ্কা। যার জেরে আরও চড়া হতে পারে পেট্রোল ডিজেলের দর।
কেন্দ্র ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, আয়কর এবং কর্পোরেট কর আদায় আশানুরূপ না হওয়ায় তেলে উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে এখন দাম ছাঁটার সম্ভাবনা কম। এই অবস্থায় ডিলারদের কমিশনের যে অংশ তেল সংস্থাগুলি ফিরিয়ে নেয়, আপাতত ক্রেতাকে সেই অংশটুকু ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল ডিলার্স ফোরামের একাংশ। পুজোর মুখে এইটুকুই যা আশার আলো।