মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু এখন নিউ ইয়র্কে। এরইমধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশে হামলা চালাল মাওবাদীরা। গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা হল এবার। আরাকু উপত্যকার বর্তমান বিধায়ক কিদারি সর্বেশ্বর রাও ও প্রাক্তন বিধায়ক সিবেরি সোমাকে গুলি করে মারল তারা। ‘গ্রাম দর্শন’ অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথেই লিপ্পিতিপুট্টা গ্রামে তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত না থাকায়, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর ঘটনার বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে। উপ মুখ্যমন্ত্রী চিনা রাজাপ্পা ও ডিজিপি (ইনচার্জ) হরিশকুমার গুপ্তা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।
বিশাখাপত্তনম রেঞ্জের পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল শ্রীকান্ত জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের সঙ্গে মাওবাদীদের একটি দল বিধায়কের গাড়ি আটকায়। সেই দলে প্রচুর মহিলাও ছিল। সেই সময় বিধায়কের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ও প্রাক্তন বিধায়ক সোমা গাড়ি থেকে নামেন। তখনই গ্রামবাসীদের আড়ালে থাকা মাওবাদীরা ওই নিরাপত্তা আধিকারিকের একে-৪৭ রাইফেল কেড়ে নিয়ে বিধায়ক সর্বেশ্বর রাও ও প্রাক্তন বিধায়ক সিবেরি সোমাকে গুলি করে। মাওবাদীদের কতজনের দল ওই হামলায় অংশ নিয়েছিল এবং হামলার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন ওই পুলিস আধিকারিক। পুলিশ সূত্রে খবর, অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা সীমান্ত কমিটির সম্পাদক রামকৃষ্ণ ওই হামলায় যুক্ত থাকতে পারে। মাওবাদীদের প্রায় ৬০ জনের একটি দল এই হামলা চালাতে এসেছিল বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, বর্তমান ও প্রাক্তন বিধায়ককে খুন করে গ্রামবাসীদের ঢাল করেই এলাকা থেকে চম্পট দেয় মাওবাদীদের ওই দল।
ধমব্রিগুড়া মণ্ডলের লিপ্পিটিপুট্টায় গ্রাম দর্শনি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন ওই দুই টিডিপি নেতা। সম্প্রতি মাইনিং লিজ নিয়ে তফসিলি উপজাতি সংরক্ষিত আরাকুর বিধায়ক সর্বেশ্বর রাওয়ের উপর ক্ষুব্ধ ছিল গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, নিজের শালার নামে মাইনিং লিজ নিয়েছেন সর্বেশ্বর। ব্ল্যাক স্টোন তোলার ফলে তাঁদের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গত জুলাই মাসে সর্বেশ্বরের বিরুদ্ধে একপ্রস্থ বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। মাওবাদীরা সেই সুযোগই নিয়েছিল। এদিন গ্রাম দর্শনি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মাওবাদীরা একযোগে বিধায়কের গাড়ি আটকায়। বিক্ষোভরতদের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রাক্তন বিধায়ক ও দেহরক্ষী গাড়ি থেকে নামতেই অপারেশন শুরু করে মাওবাদীরা। কথা বলার ফাঁকে কেড়ে নেওয়া হয় নিরাপত্তারক্ষীর রাইফেল। তারপরেই গুলি করে খুন করা হয় দুই টিডিপি নেতাকে।
২০১৪ সালের নির্বাচনে আরাকু কেন্দ্রে ওয়াই এস আর কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করে টিডিপি বিধায়ক সিবেরি সোমাকে হারিয়ে দেন সর্বেশ্বর রাও। যদিও দু’বছর পরে সর্বেশ্বর দল বদল করে টিডিপিতে যোগ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, অতীতেও ওই দুই নেতাকে খুনের হুমকি দিয়েছিল মাওবাদীরা। তাঁরা তেমন গা করেননি। যার ফল ভুগতে হল এবার।