সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার পরিকল্পনা মতই শুরু হল মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙার কাজ। বুধবার পূর্ত দপ্তরের তরফে এই কাজ শুরু করা হয়। অন্যদিকে, মাঝেরহাট ব্রিজের বিকল্প হিসেবে শহরে নতুন দুই সেতু তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। রাজ্য পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হুমায়ুন কবীর সরণি এবং চেতলা বোট ক্যানেলের ওপর ৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের ওই দুটি সেতু তৈরির জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সকে। সেতুর বহন ক্ষমতা হবে ৯৮ টন। এই দুই সেতু তৈরির জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এদিন বুলডোজার দিয়ে মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। মোমিনপুরের দিক থেকে শুরু হল এই কাজ। যে অংশগুলি ভাঙা হবে ইতিমধ্যেই সেগুলি প্রশাসনের তরফে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে লেভেল ক্রসিং তৈরির জন্য জমি জরিপের কাজ। বুধবার ঘটনাস্থলে যান পূর্ত দপ্তরের অফিসারেরা। জমি মাপজোকের কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। প্রথমে ঠিক ছিল ব্রিজের নিচে যে খাল গেছে তার ওপরে হিউম পাইপ পেতে রাস্তা করা হবে। কিন্তু সেটি বাতিল করে ঠিক হয়েছে সেখানে দুটি বেইলি ব্রিজ বসানো হবে।
পূর্ত দপ্তরের একটি সূত্রে জানা গেছে, বেইলি ব্রিজটি ৫ ফুট চওড়া হবে। একসঙ্গে এর ওপর দিয়ে আট থেকে দশটি গাড়ি যাতায়াত করবে। দু’সপ্তাহের মধ্যেই এই ব্রিজ বসানোর কাজ হবে বলে পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। ভাঙা এবং সেতু তৈরির সময় শিয়ালদা থেকে নিউ আলিপুর এবং মাঝেরহাট থেকে বজবজ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় ফের যাবেন পূর্ত দপ্তর এবং রেলের অফিসারেরা। ইতিমধ্যেই মাঝেরহাট এলাকায় বন্ধ হয়ে থাকা জোকা-বিবাদি বাগ মেট্রো রেল তৈরির কাজ শুরু করার জন্য অনুমতি দিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেতু দুর্ঘটনার পর তদন্তের জন্য ওই এলাকায় কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। ওই এলাকায় একটি লেভেল ক্রসিং তৈরির জন্য রাজ্য উদ্যোগী হয়। যে কারণে রেল, রাজ্যের পূর্ত এবং কলকাতা পুলিসের তরফে বেশ কয়েকবার এলাকা পরিদর্শন করা হয়। ঠিক হয়, রেল ওই লেভেল ক্রসিং তৈরি করে দেবে। খরচ দেবে রাজ্য সরকার। আলিপুর অ্যাভিনিউয়ের ওপর এর জন্য রেলের ৩৫ মিটার জায়গা চিহ্নিতও করা হয়েছে। বুধবার পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার রবি মহাপাত্র বলেন, ‘প্রয়োজনীয় অনুমতি এসে গেছে। বুধবার থেকে এ বিষয়ে কাজও শুরু করে দেওয়া হয়েছে। দু’মাসের মধ্যেই আমরা এই কাজ শেষ করব।’ কাজের প্রয়োজনে ভাঙা হবে একটি দেওয়ালও। লেভেল ক্রসিংয়ের কাজ রেলের তরফে করা হলেও নতুন সেতু তৈরি করবে পূর্ত দপ্তর। এর জন্য কাজে লাগানো হবে দপ্তরের দক্ষ অফিসারদের। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য তারা ম্যাকিনটোস বার্নের মতো সরকারি সংস্থার সাহায্য নিতে পারে। সব মিলিয়ে জোরকদমেই চলছে কাজ।