‘গো-রক্ষার কর্মসূচী আরএসএস-এর কাছে গুরুরত্বপূর্ণ। কিন্তু গো-রক্ষাকে গনহিংসা বা স্বঘোষিত গোরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে চলবে না’। এভাবেই গো-রক্ষার নামে দেশ জুড়ে চলা তাণ্ডবের দায় এড়িয়ে গেলেন মোহন ভাগবত। দিল্লীর বিজ্ঞান ভবনে ‘ভবিষ্যতের ভারত’ শীর্ষক কর্মসূচীর শেষ দিনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এভাবেই আরএসএস-এর গায়ে লেগে থাকা দাগ ওঠানোর চেষ্টায় নামলেন সঙ্ঘ প্রধান।
তাঁরা যে কট্টরপন্থী নন সেটা বোঝানোর চেষ্টারও কসুর রাখেননি ভাগবত। যেমন ভারতীয় মানেই হিন্দু, তাঁদের এই বক্তব্য ব্যাখ্যা করে ভাগবত বলেন, ‘যারা ভারতে থাকেন তাঁরা সবাই হিন্দু। পরিচয়ের দিক থেকে, জাতীয়তার দিক থেকেও’। এরপরেই তাঁর যুগান্তকারী মন্তব্য, ‘সব মানুষই আমাদের। আমাদের ঐতিহ্যই হল ঐক্য’। সব ভারতীয়ই হিন্দু – এমন কথা বহুদিন ধরেই বলে আসছে সঙ্ঘ। কিন্তু সকলকে ‘আমাদের লোক’ বলে এভাবে আগে উল্লেখ করেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নিজেদের ভাবমূর্তি চুনকাম করতেই এসব বলছেন ভাগবত।
কয়েকদিন ধরেই একটু অন্য সুরে গাইছেন মোহন ভাগবত। দু’দিন আগেই স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। বলেছিলেন, ওদের অবদান ভলার নয়। গতকালই মুসলিমদের নিজেদের দলে টানতে সম্প্রীতির সুর শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। বলেছিলেন, ‘মুসলমানদের গ্রহণ না করা হলে সেটা হিন্দুত্ব নয়’। এবার সর্ব ধর্ম সমন্ময়ের মতো বললেন, ‘সবাই আমাদের লোক’। অসবর্ণ বিবাহ নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন, ‘যদি ভিন্ন জাতে বিয়ে করা নিয়ে কোনও শুমারি হয় তাহলে দেখা যাবে সঙ্ঘেই তেমন লোক সবচেয়ে বেশী হবে’। বোঝা যাচ্ছে, সঙ্ঘের ভাবমূর্তি উদ্ধারে সচেষ্ট হয়েছেন ভাগবত।