পুরনো অবস্থান থেকে সরছে না আলিমুদ্দিন। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণ সভার আয়োজন না করার জন্য প্রকাশ্যে সিপিএম নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, তড়িৎ তোপদারের মতো রাজ্য নেতারা। এতে আলিমুদ্দিন বিড়ম্বনায় পড়েছে নিশ্চিত। কিন্তু ভবি ভোলেনি। বরং প্রকাশ্যে সোমনাথবাবুর স্মরণ সভার দাবি জানানোয় বিরক্ত বিমান বসু , সূর্যকান্ত মিশ্ররা। তাঁদের ব্যাখ্যা, প্রয়াত নেতার স্মরণ সভার আয়োজন করতে ‘টেকনিক্যালি’ সমস্যা আছে।
অথচ সোমনাথবাবুর বহিষ্কারের প্রসঙ্গটি রীতিমতো বিতর্কিত। লোকসভার অধ্যক্ষ পদে থাকাকালীন ইউপিএ সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের সময় তিনি দলের ফতোয়ার চেয়ে সংবিধানকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন বলেই তাঁকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। সেই বিতর্কের চুড়ান্ত অবসান এখনও হয়নি। তাই ইয়েচুরি-সহ দলের নেতারা অনেকেই গত কয়েক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে নিয়ম করে যোগাযোগ রেখে চলতেন। এমনকী, নির্বাচনের সময় দুটি সভায় তাঁকে বক্তা হিসেবেও নিয়ে যাওয়ার উদাহরণ রয়েছে।
জানা গেছে, আলিমুদ্দিনের একাংশ প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণ সভা করতে চাইলেও গোপালন ভবন নারাজ। এই নিয়ে একাধিকবার দিল্লীর নেতাদের সঙ্গে রাজ্য সিপিএম নেতাদের বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু সেখানে দিল্লীর নেতাদের চটানোর সাহস পায়নি আলিমুদ্দিন। সোমনাথ চট্টপাধ্যায়কে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি বহিষ্কার করেছিল। ফলে আলিমুদ্দিন সোমনাথের স্মরণসভা করলে তা সরাসরি গোপালন ভবনের বিরোধিতা করা হবে। সেই মুরোদ তাদের নেই। এই কারণে দলের ব্যানারে সোমনাথ-স্মরণ করছে না তারা। কিন্তু এতে সাধারণ বাঙালি জনমানসে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। তাই উপায় না দেখে গণ সংগঠনের ব্যানারে হওয়া স্মরণসভায় উপস্থিত থেকে সংঘাত এড়াচ্ছে রাজ্য সিপিএম।
সব মিলিয়ে মৃত্যুর পরেও বহিষ্কৃত বাঙালি নেতাকে গোপালন ভবন বা আলিমুদ্দিন ঝেড়ে ফেলতে পারছে না কেউই।