ভারত সরকার রাজি থাকলে বাংলা এখনই বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে তৈরি। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে হওয়া রেল ও বিদ্যুতের একঝাঁক প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছিল নিছক প্রতীকি ভূমিকা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে মাত্র ৫ মিনিটের ভাষণে সবাইকে ছাপিয়ে মমতাই হয়ে উঠলেন অনুষ্ঠানের ভরকেন্দ্র। পাশাপাশি জিতে নিলেন বাংলাদেশীদের হৃদয়।
মমতার এমন প্রস্তাবে দৃশ্যত খুশি হয়ে শেখ হাসিনা ভাষণে বললেন, মমতাকে বিশেষ ধন্যবাদ অতিরিক্ত বিদ্যুৎ প্রদানের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য। আমি বিশেষ অনুরোধ জানাব যাতে প্রধানমন্ত্রী মোদীজি প্রয়োজনীয় অনুমতি দেন। হাসিনার ভাষণ সমাপ্তির পর মোদীও বলেন, মমতাজিকে ধন্যবাদ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে ট্রান্সমিশন লিঙ্ক ব্যবহারে সহযোগিতার জন্য।
এদিন যে সংযোগের উদ্বোধন হল সেটি বহরমপুর ট্রান্সমিশন লিঙ্ক থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খুলনায় সরবরাহের জন্য। মুখ্যমন্ত্রী বাংলা ও বাঙালির একাত্মতায় গুরুত্ব আরোপ করেন। বলেন, ‘দুই বাংলার সম্পর্ক ইতিহাস, সমাজ, সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত’। নবান্ন থেকে বেরনোর মুখে বলেন, ‘বাংলাদেশকে আরও হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে রাজি আছি। এতে দু’দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে’।
বছরের শেষে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভারত অনেক বেশি সাহায্য করছে এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশের পরিকাঠামো নির্মাণেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, এই বার্তাটি দেশবাসীকে দেওয়া হাসিনার জন্য অত্যন্ত জরুরি। কারণ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে জোটের তৎপরতা চলছে, তাদের প্রধান টার্গেট ভারত বিরোধিতা। হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারত যেভাবে সাহায্য করেছিল তা আজীবন স্মরণ করব। সেই ঐতিহ্য বজায় রেখেই ভারত বাংলাদেশের উন্নয়নে সাহায্য করে চলেছে। মেঘনা ও তিতাসের উপর রেলব্রিজ হয়েছে ভারতের সাহায্যে। মোদি বলেন, ‘একমাত্র বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, হাসিনার সঙ্গে আমার প্রটোকল অনুযায়ী দেখা করার প্রয়োজন হয় না। আগামীদিনে ১.১৬ গিগাবাইট বিদ্যুৎ দেওয়া হবে বাংলাদেশকে। ২০৪০ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার যে স্বপ্ন হাসিনা দেখছেন, ভারত তাকে বাস্তবায়িত করতে সবসময় পাশে থাকবে’।