জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে বিশ্বমানের লেপার্ড সাফারি চালু করতে চায় রাজ্য বনদপ্তর। শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি ২০ হেক্টর জমির উপর গড়ে উঠেছে। আর দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে ২৩ হেক্টর জমিতে লেপার্ড সাফারি চালু করতে চাইছে রাজ্য বনদপ্তর। পর্যটন মানচিত্রে উত্তরবঙ্গকে তুলে ধরতে বিশেষভাবে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। বেঙ্গল সাফারি পার্ককে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। যে কারণেই বেঙ্গল সাফারির পর এবার রাজ্যের সব থেকে বড় লেপার্ড সাফারি গড়ার পরিকল্পনা রাজ্য বন দফতরের। ন্যাশনাল জু অথরিটির কাছে প্রস্তাব পাঠানোর পর, মিলেছে ছাড়পত্র। অবশেষে জলদাপাড়ায় তৈরি হবে এই বৃহত্তম লেপার্ড সাফারি পার্ক।
গজোলডোবার ভোরের আলো, পাখি বিতান, ঘোষপুকুরে স্নেক জু, প্রজাপতি পার্ক, বেঙ্গল সাফারিতে হাতি সাফারি-সহ রকমারি আয়োজনে শুধুমাত্র রাজ্যেই নয় পুরো দেশের পর্যটনে বাংলা প্রথম সারিতে উঠে এসেছে। শিলিগুড়ির পাশাপাশি বনকেন্দ্রিক পর্যটনে অন্যতম স্থান আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়া অভয়ারণ্য। বনকেন্দ্রিক পর্যটনকেন্দ্রের মধ্যে জলদাপাড়া প্রথম থেকেই পর্যটনমহলের অন্যতম পছন্দের স্থান। তাই বেঙ্গল সাফারির পর এবার ঢেলে সাজানোর পালা জলদাপাড়া অভয়ারণ্যকে। কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র মেলার পর, এবার রাজ্য বন দফতর দ্রুত জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে গড়ে তুলবে চিতা সাফারি।
রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘খুব তড়িঘড়ি এই চিতা সাফারি গড়ে তোলা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম স্বপ্নের প্রকল্প এই চিতা সাফারি। উত্তরবঙ্গকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই মতই কাজ চলছে।’ রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের মেম্বার সেক্রেটারি ভিকে যাদব বলেন, ‘খয়েরিবাড়িতে একটি বড় চিতা সাফারি গড়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্র অনুমতি দিয়েছে।’ ডুয়ার্স ট্যুরিজম ফোরামের সভাপতি পার্থসারথি রায় বলেন, ‘আলিপুরদুয়ারের পর্যটনে একটি নতুন পালক সংযোজিত হল। চিতা সাফারি গড়া হলে ডুয়ার্সের পর্যটনে আলাদা মাত্রা আসবে।’ বর্তমানে খয়েরিবাড়িতে ৯টি চিতা রয়েছে। তাদের এই চিতা সাফারিতে ছাড়ার পাশাপাশি আলিপুর, নন্দনকানন, থেকেও চিতা আমদানির কথা রয়েছে। যেহেতু চিতা গাছে উঠতে সক্ষম, সেই কারণে তাদের রাখতে বিশেষ ধরণের এনক্লোজারও তৈরি করতে হয়। বন দফতর সব দিক চিন্তা করেই এগোচ্ছে। চলতি বছর থেকেই, জোর কদমেই শুরু হয়ে যাবে এই চিতা সাফারির কাজ; যে জন্য রাজ্য বন দফতর থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে দশ কোটি টাকা। আশা করা যাচ্ছে, খুব দ্রুতই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সফল হবে রাজ্য।