কেরালার বন্যাদুর্গতদের সাহায্যার্থে কেন্দ্র সরকার যে অর্থ ধার্য করেছে, তার চেয়েও বেশি অর্থসাহায্য বিদেশ থেকে পেল বন্যাবিধ্বস্ত কেরালা। টাকার অঙ্ক ৭০০ কোটি। কেরালার বন্যা দুর্গতদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহী পাঠিয়েছে এই মোটা অঙ্কের ত্রাণ। একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এই খবর জানিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
প্লাবনের ভয়াবহতা বিচার করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করছে কেরালা প্রশাসন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে ৬০০ কোটি টাকার সাহায্য মিলেছে। অন্যান্য রাজ্যও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যেই হলফনামা দিয়ে কেরালাকে ‘গুরুতর প্রাকৃতিক বিপর্যয়’ বলে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। পরিস্থিতি ‘গুরুতর’ মানলেও, বিরোধীদের দাবি মেনে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করেননি প্রধানমন্ত্রী। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর নিয়মাবলী মেনে কেরালার বন্যা পরিস্থিতিকে লেভেল থ্রি, অর্থাৎ অতি গুরুতর বলে গণ্য করা হচ্ছে। এই সময়ে ভিনদেশের ৭০০ কোটি টাকা অনুদান, মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। কারণ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী আগেই বলেছেন, এমন ভয়াল বন্যার মোকাবিলায় ৫০০ কোটি যথেষ্ট নয়।
তার ওপর কেন্দ্রের কাছে কেরল চেয়েছিল ২ হাজার কোটি। কিন্তু কেন্দ্র দিয়েছে ৫০০ কোটি।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে দেওয়া হয়েছে আরও ১০০ কোটি। অথচ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ৭০০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য দিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। আমিরশাহী যদি এত টাকা দিতে পারে, তা হলে কেন্দ্র কেন পারল না? শুরু হয়ে গিয়েছে জোর চর্চা।তবে রাজ্য বা কেন্দ্র এই চর্চায় আমল দিতে নারাজ। কেরালাকে আপাতত স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কাজেই ব্যস্ত সকলে।
উল্লেখ্য, আরব আমিরশাহীর মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশই কেরালাবাসী। ২০ লক্ষ ভারতীয়ের বাস সেখানে। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই কেরলের অধিবাসী। যখন করাল বন্যার গ্রাসে কেরালা বাঁচার জন্য লড়াই চালাচ্ছে, চুপ করে বসে থাকতে পারেনি এই দেশটি। ঝাঁপিয়ে পড়েছে ডুবন্ত কেরালাকে টেনে তুলতে। শুধু তাই নয়, বিপর্যস্ত কেরালাবাসীকে সাহায্য করতে একটি কমিটিও গঠন করেছে তারা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম টুইট করে জানান, ‘আমিরশাহীর সাফল্যে কেরালাবাসীদের অনেক অবদান রয়েছে। তারা আমাদের হৃদয়ে ছিল, থাকবেও’।