এনআরসি–র নামে স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা চলছে। জরুরি অবস্থার সবরকম পরিস্থিতি তৈরি করছে কেন্দ্র। রাষ্ট্রপতি শাসনের মতো অবস্থা তৈরি করে ভোট করতে চাইছে। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই অভিযোগ করেছেন। অসম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিক হিসেবে সব কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও জোর করে নাম বাদ দিয়ে অনুপ্রবেশকারী বা শরণার্থী বলছে।’
তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৪৭ থেকে শুরু করে ১৯৬৪ বা ১৯৬৫ সালে ভোট দিয়েছেন, এমন নাগরিকের নামও বাদ দিয়েছে। ইন্দিরা–মুজিব চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১–এর ২৪ মার্চের আগে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা ভারতীয়।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এনআরসি–তে অসমে বাদ যাওয়া ৪০ লক্ষের মধ্যে ৩৮ লক্ষই বাংলাভাষী। এর মধ্যে ২৫ লক্ষ হিন্দু বাঙালি, ১৩ লক্ষ মুসলিম বাঙালি। তঁার প্রশ্ন, ‘এঁদের অপরাধ কি বাংলাভাষী হওয়া? ভোটের রাজনীতি হচ্ছে। বিজেপি ভয় পাচ্ছে, ভোট হলেই হারবে। অসমে ৪০ লক্ষ নাম বাদ গেলেও ওখানে আরও ২ কোটি বাঙালি আছেন।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি দাঙ্গা করে বেড়ায়, তাদের নাম আগে বাদ দেওয়া উচিত।’ অমিত শাহকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘উনি নিজের বাবা–মায়ের জন্মতারিখ জানেন?’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজের বাবা–মায়ের জন্মতারিখ জানেন না। তা হলে কি তিনি অনুপ্রবেশকারী? তখনকার দিনে কেউ জন্ম শংসাপত্র রাখত? স্বামী বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর, কাজী নজরুল ইসলামের বাবা–মায়ের জন্মতারিখ কেউ জানেন? তাঁরা কি তা হলে অনুপ্রবেশকারী?’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ প্রতিবাদ করলে পাঠানো হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। শিশু–সহ ১২০০ লোককে আটকে রেখেছে। বাংলার মানুষও আটকে আছেন। মুর্শিদাবাদ থেকে কাপড় বিক্রি করতে যাওয়া ব্যবসায়ীদেরও সেখানে আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের সাংসদদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি যেতেই পারি। কিন্তু চাই না সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ুক।’
এদিন অসমের বাঙালিদের ১৪টি সংগঠনের ‘ইউনাইটেড বেঙ্গলি ফোরাম’–এর প্রতিনিধিরা নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। ছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।