“বিজেপি ভারত ছাড়ো, সিন্ডিকেট তৈরি করছে তৃণমূল কংগ্রেস।” শনিবার মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে তৃণমূলের সভায় যোগ দিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
১৬ইমে মেদিনীপুরের সভা করেন প্রধানমমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সভা থেকে সিন্ডিকেটরাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করেন মোদী। জাতীয় স্তরে বিরোধী জোট গঠনের কথা বলে এদিন সেই সমলোচনারই জবাব দিলেন অভিষেক।
মঞ্চ থেকে অভিষেক “২০১৯ বিজেপি ফিনিশ”–এর ডাক দিয়ে কটাক্ষের সুরে যুব তৃণমূল সভাপতি বলেন, “আগে প্যান্ডেল সামলাক বিজেপি, পরে বাংলা সামলাবে। বিজেপি যে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করছে, তা বাংলায় সম্ভব হবে না। কারণ তৃণমূল বিবেকানন্দের হিন্দুত্বে বিশ্বাসী, যোগী আদিত্যনাথের হিন্দুত্বে নয়।”
মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে এদিন মানুষের জমায়েত ছিল চোখে পড়ার মতো। কেন্দ্রের কৃষক দরদী অবস্থানকে মোদীর মিথ্যাচার বলে দাবি করেন অভিষেক। তৃণমূলের যুব নেতার দাবি, “গত ১৬ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর কৃষিকল্যাণ সমাবেশে এরাজ্যের কোনও কৃষক ছিলেন না। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড সহ চার রাজ্যের ১০টি জেলা থেকে লোক আনা হয়েছিল।”
গঙ্গাদূষণ রোধে বিজেপির অর্থ বরাদ্দ নিয়েও মেদিনীপুরের সভা থেকে প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, “মাত্র ৩০০০ কোটি টাকায় কখনও এত বড় গঙ্গানদী পরিষ্কার করা যায় না। ওই টাকায় পুকুরও সাফাই সম্ভব নয়।”
সভার প্রথমে পরিবহনমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিকে ‘জুমলা পার্টি’ নামে সম্বোধন করে বলেন, “বিজেপি দেশজুড়ে বিভাবজনের রাজনীতি করতে চাইছে। কিন্তু বাংলায় তা করতে পারবে না কারণ, বাংলার পাহারাদার হিসেবে রয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। বাংলায় সিন্ডিকেট করে ভোট করতে হয়। গুজরাটের মতো সিন্ডিকেট বাংলায় গড়তে দেবে না তৃণমূল কংগ্রেস।” শুভেন্দুর অভিযোগ, তাঁর গত চার বছরে মোদী সরকার মেদিনীপুরের জন্য কিছুই করেনি।
এছাড়া ফিরহাদ হাকিম, পার্থ চ্যাটার্জি, সুব্রত বক্সী, কল্যাণ ব্যানার্জি এবং মানস ভুঁইঞাও এদিনের সবায় বক্তব্য রাখেন। বিজেপির অস্ত্র মিছিল এবং রথযাত্রার সমালোচনা করে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রথ চালিয়ে বা তরোয়াল ঘুরিয়ে বাংলাকে ভয় দেখানো যাবে না।” সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি মোদীকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সঙ্গে তুলনা করেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, “আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে যা খামতি আছে, সেসব দূর করে ২০১৯ সালে মমতা ব্যানার্জিকে সামনে রেখেই ধর্ম নিরপেক্ষ জোট তৈরি হবে।”
তৃণমূল নেতৃত্বের ঝাঁঝালো আক্রমণ ও মানুষের ভিড়ই জানান দিল বাংলার মাটি তৃণমূলের দুর্জয় ঘাঁটি।