তারা খচিত কাশ্মীরে সন্ধ্যা দেখা স্বপ্নের মতো। সন্ধ্যার আগেই বাড়ির ভিতর ঢুকে যেতে হয় মকবুল, তনবির, ফইজানদের। বিকেলের আলো শেষ হয়ে কবে যে সন্ধ্যা হতে দেখেছিল মনে পড়ে না ওদের। বহুদিন পর কলকাতায় এসে সন্ধ্যা দেখল কাশ্মীরি কিশোর কিশোরীর দল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাতের শহরেও নির্ভয়ে বিচরণ করল ওরা। অনেকটা স্বপ্মপূরণের মতো। তাইতো তিলোত্তমা যেন ওদের কাছে ‘খোলা হাওয়া’।
কাশ্মীরের ৩০ জন ফুটবলার কলকাতায় বেড়াতে এসেছে সিআরপিএফের হাত ধরে। পাহাড় ছেড়ে তারা দেখলো স্নিগ্ধ সমতল। ওরা প্রত্যেকে পায়ের জাদুগর। প্রত্যেকে ফুটবল খেলে। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের নিয়ে গেল ঐতিহ্যের মোহনবাগান মাঠে। সেখান থেকে রাজারহাটের ওয়াক্স মিউজিয়াম, ভারতীয় জাদুঘর, নিক্কো পার্ক। বেশিরভাগ ফুটবলারই কাশ্মীরের কুলগাম ও অনন্তনাগের বাসিন্দা। অনন্তনাগের এক কলেজ ছাত্রের কথায়, কাশ্মীরের এখন যা পরিস্থিতি, তাতে সারাক্ষণ ভয়ে থাকেন তাঁরা। বিকেলের পর তাঁদের বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হয় না। অন্ধকার নামার আগেই তাঁদের বাড়িতে ঢুকে যেতে হয়। সিআরপিএফ-র সঙ্গে কাশ্মীরের বাইরে বেড়াতে যাচ্ছি জানতে পারলে জঙ্গি সংগঠনের ফতোয়ার মুখে পড়তে হতে পারে পরিবারকে। তাই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান চায় উপত্যকার নতুন প্রজন্ম।
সিআরপিএফের আইজি বলেন, ‘কাশ্মীরে পাথরবাজি’ একটি বড় সমস্যা। বহু যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। এই কিশোর-কিশোরীরা যেন কোনওদিন ‘পাথরবাজি’ না করেন। অন্যরাও যাতে না করেন, তাঁদের বোঝানোর দায়িত্বও যেন এই ছাত্ররাই নেন। ভারতের বিভিন্ন জায়গার সুন্দর ছবি কাশ্মীরি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরাই এই সফরের গুরুত্ব।‘
ভারত মানেই হিংসাদীর্ণ কাশ্মীর নয়, দেশের মধ্যেই রয়েছে খোলা হওয়ার স্বাদ। কলকাতা যেন প্রচ্ছবি উপত্যকার এই তরুণ তরুণীদের কাছে।