পরের বছর লোকসভা ভোট। কিন্তু স্বস্তিতে নেই পদ্মফুল শিবির। সৌজন্যে শরিকদের গুঁতো। অন্ধ্রে চন্দ্রবাবু, কাশ্মীরে মেহবুবা মুফতি এনডিএ মুক্ত। জোট ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে শিবসেনা। এবার কী সেই তালিকায় সামিল হতে চলেছেন নীতীশ কুমার? রাজনৈতিক মহলে সেই জল্পনাই তুঙ্গে।
সংযুক্ত জনতা দলের তরফে বিজেপিকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গো-বলয়ের আসন্ন তিনটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটে তারা বিজেপির সঙ্গে জোটে লড়াই করবে না। এককভাবে লড়াই করবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে কার্যত নীতীশ কুমারের দলের বিশেষ কোনও শক্তি নেই। শুধুমাত্র বিহারের মানুষ কিন্তু ওইসব রাজ্যের ভোটার, এরকম পরিবারগুলিকেই টার্গেট করছেন নীতীশ কুমার। তাই জয় পরাজয় নয়, আসলে বিজেপিকে সবক শেখাতে এই সিদ্ধান্ত প্রতীকী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
“নীতীশ কুমার সম্ভবত বিজেপির হাত ছেড়ে আবার ফিরতে পারেন ধর্মনিরপেক্ষ জোটে।“ জল্পনা গভীর হয়েছে কংগ্রেস নেতা বীরাপ্পা মইলির এই মন্তব্যকে ঘিরেই।
দ্বন্দ্বের সূত্রপাত বিহারে বিজেপির আগামী লোকসভা ভোটে বেশি আসনে লড়াই করার দাবিকে কেন্দ্র করে। গেরুয়া বাহিনীর দাবি, ২০১৪-তে সিংহভাগ আসনে জয়ী হয়েছিল তারা। এবার বিহারে বিজেপি বড় পার্টনার হিসাবেই লড়াই করবে। উল্টো সুর নীতীশের। সংযুক্ত জনতা দল জানিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে বিহারে মুখ করতে হবে নীতীশ কুমারকেই। বিজেপি নয়, সংযুক্ত জনতা দলই হবে বড় শরিক। এই দাবি স্বাভাবিকভাবে বিজেপির পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নীতীশের আচরণে ক্ষুব্ধ বিজেপি। দুই শরিকের মধ্যে শুরু হয়েছে ‘ঠাণ্ডা যুদ্ধ’।
অন্ধ্রপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীরের পর এবার নীতীশ কুমারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলে এনডিএ তালিকা থেকে বাদ যাবে বিহারও। শিবসেনাও ঘোষণা করেছে রেখেছে তারা লোকসভা ভোটে এনডিএ জোটে থাকছে না। জোট ছেড়ে একা লড়াই করবে। আর সেটা হওয়ার অর্থ মহারাষ্ট্র সরকার থেকেও শিবসেনা সমর্থন তুলে নেবে। যদি সেটাই হয় সেক্ষেত্রে মহারাষ্ট্র সরকারও বিপাকে পড়বে। কারণ সেখানে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। শিবসেনার সমর্থনেই সরকার চলছে। সব মিলিয়ে চার বছর ধরে যেভাবে একের পর এক রাজ্য যোগ হয়েছে বিজেপির ঝুলিতে এবার কী তার উল্টো যাত্রা? দেওয়াল লিখন কী ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে? উদ্বেগে বিজেপি নেতৃত্ব।