মসনদ হারানোর পর থেকেই ভোটব্যাংকে ধস অব্যাহত৷ অস্তিত্ব “সংকটে” সিপিএম৷ “সংকট” থেকে মুক্তি পেতে তাই আবারও জনসম্পর্ক তৈরিতে গুরুত্ব দিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷
সূর্যকান্ত মিশ্রের মতে, “এখনও পর্যন্ত আমরা এ রাজ্যের মানুষকে কেন এই সত্য বোঝাতে পারছি না। মানুষকে সঙ্গে না নিয়ে আমরা কোনও পরিবর্তনই আনতে পারব না।” এমন স্বীকারোক্তির পাশাপাশি সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জনগণের সঙ্গে গভীরভাবে মেশার জন্য পার্টি কর্মীদের কাছে আবারও আবেদন করেছেন৷ তাঁর কথায়, “পার্টির রাজনৈতিক স্লোগান যতক্ষণ না জনগণ গ্রহণ করছে ততক্ষণ পার্টি জনগণকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিতে পারবে না।”
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সূর্যবাবুর মন্তব্য থেকে স্পষ্ট, রাজ্যে সিপিএমের স্লোগান এখনও অধিকাংশ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় । নিজের বক্তব্যের পক্ষে সূর্যবাবুর সাফাই, “গত চার বছর ধরে পার্টি তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী স্লোগান দিয়ে চলেছে৷ কিন্তু জনগণ তার নিজস্ব অভিজ্ঞতায় শেখে।” অর্থাৎ তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী স্লোগান যে মানুষ গ্রহণ করছে না তা কার্যত স্পষ্ট তাঁর এই বক্তব্য থেকে।
“শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্বে হবে না, সাংগঠনিক নেতৃত্বও চাই।” এই মন্তব্যে মাধ্যমে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক কার্যত দলের নেতৃত্বকেই নিশানা করেছেন। সিপিএম সূত্রে খবর, আট বা নয়ের দশকে রাজ্য সিপিএমে যেভাবে সাংগঠনিক নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া হত তা এখন আর নেই বললেই চলে। আর সেই কারণেই যোগ্য সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক নেতার অভাবে ক্রমশ সমর্থকের সংখ্যা কমছে। ভোটব্যাংকেও তাই ধস নেমেছে। পাশাপাশি পার্টি কর্মীদের উদ্দেশে সূর্যবাবুর বার্তা, “তত্ত্বজ্ঞানে চলবে না তত্ত্বকে প্রয়োগ করতে হবে।” পার্টিতে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের যে কোনও জায়গা নেই। পার্টি নেতৃত্বের নিচুতলার উপর দায় চাপানোর অভ্যাস বদল করতে বলেছেন সূর্যবাবু ।
সংগঠনের অবস্থা বেহাল। পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল তা আবারও স্পষ্ট করেছে। তাই রাজ্য সম্পাদকের এই হুঁশিয়ারিতে আদৌ নেতা, কর্মীদের সম্বিত ফেরে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন থাকেই যায়।