পুজোর আগেই কলকাতা ও শহরতলির অটোর উপর রাশ টানতে চায় সরকার। সেই লক্ষ্যে একটি খসড়া নীতি তৈরি করে অটোচালকদের সংগঠনগুলিকে দিয়েছে সরকার।
কলকাতা, হাওড়া, সল্টলেক ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের আওতাধীন ৪৭৫টি অটো-রুটের ক্ষেত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে বলে দেওয়া হয়েছে, কোন রুটে সর্বোচ্চ কতগুলি অটো চলবে।
পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এই খসড়ানীতি ও রুট চার্ট অটো সংগঠনগুলিকে দেন। ৩০ দিনের মধ্যে খসড়া নিয়ে বক্তব্য থাকলে জানাতে হবে। ১ অগস্ট চূড়ান্ত নীতি প্রকাশিত হবে।
কী রয়েছে খসড়ানীতিতে…
রাজ্যের কোনও রুটে বেআইনি অটো চলতে দেওয়া হবে না। গাড়ি রেজিস্ট্রেশন করিয়ে, রুট পারমিট নিয়ে অটো চালাতে হবে
২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে যে সব বেআইনি অটো চলছে, তার বৈধ কাগজপত্র তৈরি করতে হবে। টু-স্ট্রোক অটো থাকলে তা ফোর-স্ট্রোক করতে হবে। এলপিজি, সিএনজি, বিদ্যুৎ বা ব্যাটারি-চালিত অটো চালাতে হবে।
প্রতি রুটে সর্বোচ্চ অটোর সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হবে।
অটো ডিলাররা সরকারি অফার লেটার ছাড়া একটি অটোও বিক্রি করতে পারবে না। করলে সরকার আইনি ব্যবস্থা নেবে।
কলকাতা ও অন্য শহরের জন্য অটোর নির্দিষ্ট রং। যাতে এক এলাকার অটো অন্য এলাকায় ঢুকতে না পারে। পরিবহণমন্ত্রী এ জন্য পরিবহণ দপ্তরের ডিরেক্টর ও কমিশনারকে নিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে নয়া রং নিয়ে চালকদের উপরে কোনও বাড়তিবোঝা না-চাপে।
নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি অটোয় বাধ্যতামূলক ভাবে হাই সিকিউরিটি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার প্লেট (এইচএসআরপি) লাগাতে হবে।কাটা রুটে অটো চালানো যাবে না।
ইচ্ছেমতো, বিশেষ করে উৎসবের সময় অটোর ভাড়া বাড়ানো যাবে না।
বাড়তি যাত্রী তোলা যাবে না।
এলইডি বা তীব্র আলো দিয়ে অটো সাজানো যাবে না। রাখা যাবে না উচ্চগ্রামের অডিয়ো সিস্টেম। অটো চালানোর সময় চালত মোবাইলে কথা বলতে পারবেন না।
যাত্রী, বিশেষ করে শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। তাঁদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করতে হবে।
শহরের প্রতিটি রুটে স্ট্যান্ডের সুবিধা পেতে পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও পুরসভার মতো সংস্থাগুলির সাহায্য পাবেন চালকরা।
পরিবহণ কর্তারা যা বলছেন— রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট না-থাকায় বেআইনি অটো দুর্ঘটনায় পড়লে বিমার সুবিধা পায় না। তাই নয়া নীতিতে বেআইনি অটো রোধে জোর দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা ছাড়াও আসানসোল-শিলিগুড়ি ও অন্যান্য জেলা আরটিও-দের বলা হয়েছে, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনমতো রুট তৈরি করতে। এ ক্ষেত্রে বাসের ক্ষতির দিকটিও মাথায় রাখতে হবে।