দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মাসখানেক আগেই প্রকাশিত হয় আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা। যা থেকে বাদ গিয়েছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম। কিন্তু এঁদের মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু। জন্মও এ দেশেই। ফলে ইতিমধ্যেই ‘হিন্দু বিরোধী বিজেপি হুঁশিয়ার’ স্লোগান উঠতে শুরু করেছিল গোটা আসামজুড়ে। এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার বিরুদ্ধে। যা নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছিল গেরুয়া শিবির। অবশেষে অপসারণ করা হল হাজেলাকে। শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে মদ্যপ্রদেশে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তবে কেন এই পদক্ষেপ, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, অসময়ে নায়ক থেকে খলনায়ক হওয়া হাজেলাকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর রাজ্যের শাসকদল থেকে শুরু করে নানা সংগঠনগুলি আক্রমণ শানিয়েছে হাজেলার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব প্রদান করেছেন এনআরসি কো-অর্ডিনেটর। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল, ‘কিং মেকার’ হিমন্ত বিশ্বশর্মাও হাজেলার ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এহেন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত জল্পনা উসকে দিয়েছে। এদিন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের একটি ডিভিশন বেঞ্চ হাজেলার অপসারণের নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই অসমের নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৩.২৯ কোটি। তবে তার মধ্যে থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল ৪০ লক্ষ আবেদনকারীর। তারপর চলতি বছরের ৩১ আগস্ট নাগরিকপঞ্জী প্রকাশ হতে দেখা যায়, বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। এদের মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু বাঙালি। বাদ পড়েছে ভূমিপুত্র অসমীয়াদের নামও। তারপর থেকেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল হাজেলাকে। এবার শেষমেশ তাঁকে অপসারণ করল শীর্ষ আদালত।