প্রায় বিনা নোটিশেই মেইন লাইনে বাতিল করা হল প্রচুর লোকাল ট্রেন। তা-ও আবার ভরা অফিসের কর্মব্যস্ততার দিনেই।কারণ, ব্যারাকপুর ও ইছাপুর স্টেশনের মধ্যে অটোমেটিক সিগন্যালের কাজ হবে। রেল সূত্রে পাওয়া খবর, শুক্রবার থেকে শুরু করে এই কাজ চলবে রবিবার পর্যন্ত। মেইন লাইনে সব স্টেশনেই অটোমেটিক সিগনালিং সিস্টেম আগে থেকেই কাজ করছে। মাঝে শুধু ইছাপুর ও পলতায় ছিল না এই ব্যবস্থা। সেটাই সম্পূর্ণ করা হবে এ বার। তা হলে মেইন লাইনের সব স্টেশনেই চালু হয়ে যাবে অটোমেটিক সিগনালিং সিস্টেম। যার ফলে এই তিন দিন রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হবে নিত্যযাত্রীদের।
মেইন লাইনে বাতিল করা হয়েছে রানাঘাট, নৈহাটি ও ব্যারাকপুর থেকে শিয়ালদহ এবং শিয়ালদহ থেকে এই তিন স্টেশনগামী প্রায় সবকটি লোকাল ও গ্যালোপিং ট্রেন। ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ পর্যন্ত এই ট্রেনগুলি চলবে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে নিত্যযাত্রীরা। অনেক যাত্রীই এ ব্যাপারে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, রবিবার বাদে কাজের দিনগুলিতে মেইন লাইন থেকে বহুমানুষই কাজের সূত্রে বা অফিসে যোগ দিতে কলকাতা আসেন। এই লোকাল বা গ্যালোপিং ট্রেনগুলি ছাড়া যাঁদের কাছে আর কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। বাস বা অন্যান্য পরিবহনের ক্ষেত্রে, অত দূর থেকে অল্প ভাড়া ও স্বল্প সময়ে এইদিকে আসা প্রায় অসম্ভব।
৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত যে সব আপ ট্রেন বাতিল করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ৭টি ব্যারাকপুর লোকাল। ৯টি নৈহাটি লোকাল। ৪টি কল্যাণী সীমান্ত লোকাল। রানাঘাট-লালগোলা বাতিল করা হয়েছে ১টি। বাতিল করা হয়েছে ১টি দমদম জংশন-ব্যারাকপুর লোকাল। এই দিন ডাউন ট্রেন বাতিলের তালিকায় রয়েছে, ৭টি ব্যারাকপুর লোকাল। ৯টি নৈহাটি লোকাল। ৪টি কল্যাণী সীমান্ত লোকাল। ১টি রানাঘাট লোকাল। একটি ব্যারাকপুর-দমদম জংশন লোকাল।
৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা থেকে পর ৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত যে সব আপ ট্রেন বাতিল থাকবে তার মধ্যে ১৩টি ব্যারাকপুর লোকাল। ১৩টি নৈহাটি লোকাল। ৪টি কল্যাণী সীমান্ত লোকাল। ১টি রানাঘাট লোকাল। ১টি রানাঘাট-লালগোলা। ১টি দমদম জংশন ব্যারাকপুর লোকাল। এই দিন ডাউন লাইনে বাতিল থাকবে ১৩টি ব্যারাকপুর লোকাল। ১৩টি নৈহাটি লোকাল। ৪টি কল্যাণী সীমান্ত লোকাল। ১টি রানাঘাট লোকাল। ১টি রানাঘাট-লালগোলা। ১টি ব্যারাকপুর-দমদম জংশন লোকাল।
৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা থেকে পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত যে সব আপ ট্রেন বাতিল থাকবে তার মধ্যে ৪টি ব্যারাকপুর লোকাল। ৬টি নৈহাটি লোকাল। ৪টি কল্যাণী সীমান্ত লোকাল। ১টি রানাঘাট লোকাল। ১টি দমদম জংশন-ব্যারাকপুর লোকাল। একই দিনে ডাউন লাইনে বাতিল থাকবে ৪টি ব্যারাকপুর লোকাল। ৬টি নৈহাটি লোকাল। ৪টি কল্যাণী সীমান্ত লোকাল। ১টি রানাঘাট লোকাল। ১টি ব্যারাকপুর-দমদম জংশন লোকাল।
১০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত যে সব আপ ট্রেন বাতিল থাকবে তার মধ্যে ৫টি ব্যারাকপুর লোকাল। ২টি নৈহাটি লোকাল। ১টি রানাঘাট লোকাল। এই দিন ডাউন লাইনে বাতিল থাকবে ৫টি ব্যারাকপুর লোকাল। ২টি নৈহাটি লোকাল। ১টি রানাঘাট লোকাল। পূর্ব রেলের তরফে বাকি ট্রেন চলাচল বিঘ্ন হওয়ার আশঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে।
এছাড়া মাঝেরহাট উড়ালপুলের যে অংশ ভেঙে পড়েছে তা একদম ট্রেন লাইনের কাছেই। নিরাপত্তার কথা ভেবে চক্ররেল চলাচল আপাতত ওই জায়গায় বন্ধ রাখার কথাও জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। চক্ররেলের মাঝেরহাটগামী সব ট্রেন সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু ট্রেনের গতি পরির্বতন করা হয়েছে। যদিও যাত্রীদের সমস্যা মেটাতে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু বিশেষ ট্রেনও। আপাতত চারটি ট্রেন চলবে এই মাঝেরহাট পর্যন্ত।এর পর পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেবে রেল। তবে, রেলের সিদ্ধান্তে যে ভোগান্তি বাড়ালো নিত্যযাত্রীদের, এ কথা বলাই বাহুল্য। প্রতিদিন অফিস টাইমে সবকটি ট্রেনেই যা ভিড় দেখা যায়, সেই ভিড়ই প্রমাণ করে দেয়, এই ট্রেনগুলির প্রয়োজনীয়তা।