রাজ্যবাসীর সুবিধার কথা ভেবে গত ৮ বছরে একাধিক উদ্যোগ ও প্রকল্প নিয়েছে তৃণমূল সরকার। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্য সরকার থেকে প্রাপ্য যে কোনও অনুদান বা হকের টাকা এবার বাড়িতে বসেই পেতে পারবেন সাধারণ মানুষ। এই সুবিধা দিতে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্ক বা আইপিপিবি’কে তালিকাভুক্ত করেছে রাজ্য সরকার। যে কোনও ব্যক্তি, যাঁর ওই পেমেন্টস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে, তিনি টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। রাজ্য সরকারের থেকে প্রাপ্য টাকার অঙ্ক যদি এক লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে পোস্ট অফিসের সেভিংস অ্যাকাউন্টে বাদবাকি টাকা চলে যাওয়ার সুবিধাও পাওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, অনলাইনে সাধারণ মানুষের কাছে অনুদান বা প্রাপ্য টাকা পৌঁছে দিতে রাজ্য অর্থদফতর ২০১৪ সাল থেকে ইন্টিগ্রেটেড ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সাহায্য নেয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ই-কুবেরের সঙ্গে একযোগে ওই সুযোগ দেয় তারা। যাঁরা সরকারের থেকে টাকা পান, তাঁদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রাপ্য টাকা চলে আসে। এ রাজ্যে এখন প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের আইপিপিবি’র অ্যাকাউন্ট আছে। ডাক বিভাগের তরফে জানান হয়েছে, এবার থেকে চাইলে তাঁরা যেমন ওই সুযোগ পাবেন, তেমনই যাঁদের অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁরাও অ্যাকাউন্ট খুলে ওই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হবেন।
প্রসঙ্গত, এ রাজ্যে প্রায় ১০ হাজার পোস্ট অফিস আছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ডাক বিভাগের মাধ্যমে আইপিপিবি চালু করার পর, সেই সুযোগ কাজে লাগাতে উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার। কারণ, ব্যাঙ্ক না থাকলেও, সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই থাকে ডাকঘরগুলি। আর যে কোনও ডাকঘর থেকেই আইপিপিবি’র অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। এই অ্যাকাউন্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা, গ্রাহক চাইলে বাড়িতে বসেই লেনদেন করতে পারবেন। টাকা তোলা বা জমা দেওয়া থেকে শুরু করে যে কোনও লেনদেন বাড়ি এসে পোস্টম্যান করে দিয়ে যান। রাজ্য সরকার সেই সুযোগটি গ্রাহকদের করে দিতে আইপিপিবি’কে কাজে লাগাতে চুক্তি করেছে।
ডাক বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, গ্রাহকের কাছে পৌঁছনোর জন্য আমাদের যে বিস্তৃত পরিকাঠামো আছে, তাকে কাজে লাগাতে আগ্রহ দেখিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ফলস্বরূপ সাধারণ মানুষকে সরাসরি আর্থিক সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে আইপিপিবি’কেও তালিকাভুক্ত করেছে তারা। যেহেতু এখানে ডাককর্মীরা বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে লেনদেন করে আসেন, তাই সরকারি অনুদান প্রাপকরা চাইলে পোস্ট অফিসে না এসে ঘরে বসেই লেনদেন করতে পারবেন। এতে গ্রাহকের সময় ও পরিশ্রম বাঁচবে। এবং এর ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন বয়স্ক আর প্রতিবন্ধীরা।