লোকসভা ভোটে এ রাজ্য থেকে বিজেপি বেশ কয়েকটি আসন পেয়ে যাওয়ায় আসন সংখ্যা কমেছিল তৃণমূলের। কিন্তু সেসব এখন অতীত। কারণ সেই ধাক্কা কাটিয়ে নব উদ্যমে নির্বাচনী লড়াই শুরু করে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। দলের পরামর্শ দাতা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে। পিকের মাথা আর মমতার ক্যারিশ্মা, এই দুইয়ের মিল ঘটতেই বিজেপির দখল করা পুরসভাগুলি পুনরুদ্ধারে সফল হয়েছে দল। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কেমন ফল করবে দল?
রাজ্য বিধানসভার সংরক্ষিত আসনের মধ্যে কম-বেশি ৬০টির উপরেই ঝুলে আছে তৃণমূলের ভাগ্য। লোকসভা ভোটের ফলের ভিত্তিতে ২৯৪ আসনের বিধানসভায় সমীক্ষা চালিয়ে তৃণমূলকে এমনটাই জানিয়েছেন প্রশান্ত। গত লোকসভা নির্বাচনে হাতছাড়া তফসিলি জাতি ও জনজাতি ভোট ফেরাতে পারলে ২০২১ সালে তৃণমূলের ২০০ আসন নিশ্চিত হতে পারে বলে দলীয় নেতৃত্বকে ‘আশ্বস্ত’ করেছেন তিনি। তফসিলি সংরক্ষিত আসনের দলীয় বিধায়ক, জেলা পরিষদ সভাধিপতি ও সাংগঠনিক সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রশান্ত।
প্রসঙ্গত, দলের তথ্য পেশ করে বিধায়কদের কাছে প্রশান্ত জানতে চেয়েছিলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেতা আসনগুলিতে লোকসভা ভোটে ধস হয়েছে কেন। শুধু আসন কমেছে, তা-ই নয়। ফলাফলে স্পষ্ট, গোটা রাজ্যে বিজেপি যে সব আসন জিতেছে, তার বেশির ভাগ তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। বিধানসভা ভোটের হিসেবে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত ৮৪ টি আসনের ৫৮টি তৃণমূলের দখলে। টিম পিকের মতে, এই আসন ধরে রাখতে পারলে অসংরক্ষিত আসনেও তফসিলি জাতি ও জনজাতি ভোট ফেরানো যাবে। আর এতে মমতা সরকারের ‘হ্যাট্রিক’ও নিশ্চিত হয়ে যাবে।
২০১৬ সালের হিসেব ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বদলে গেল কী ভাবে? বৈঠকে সংরক্ষিত আসনের বিধায়কদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই অংশের দলীয় জনপ্রতিনিধিদের জনবিচ্ছিন্নতা উদ্বেগের কারণ। মমতার মতে, তফসিলি জাতি ও জনজাতি বিধায়কেরা এই অংশ থেকে উঠে এলেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। ফলে, জনজাতি মানুষও এই জনপ্রতিনিধিদের আর নিজেদের লোক মনে করছেন না। লোকসভা ভোটে তার প্রভাব পড়েছে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন মমতা। এই সমস্যা দূরীকরণে উদ্যোগী হয়েছে দল। সূত্রের খবর, সরকারি তরফেও তফসিলি অধ্যুষিত অঞ্চলে গৃহ প্রকল্পের সুবিধা, বার্ধক্যভাতা প্রাপকের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।