মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে রাজ্যের রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজের পাশাপাশি গ্রামগুলিরও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে। রাজ্য সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় সমৃদ্ধ হয়ে এ রাজ্যের কুটিরশিল্প এখন পাড়ি দিচ্ছে বিদেশেও। বাংলার গ্রামে গ্রামে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলিও ইদানীং কুটিরশিল্পের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হচ্ছে। গ্রামের মূল রোজগারের উৎস হচ্ছে কুটিরশিল্প। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এই কুটিরশিল্প জেলা-রাজ্য-দেশ নয় বিদেশেও পাড়ি দিচ্ছে। গতকাল রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র একথা জানালেন।
অমিত মিত্র জানিয়েছেন, বাংলার ডোকরা, পটচিত্র, মাদুর, কাঠের মুখোশ, টেরাকোটা, ছৌ মুখোশ জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন লাভ করেছে। তিনি বলেন, ‘১৫টি জেলায় হাব করা হয়েছে। ১ লক্ষ ২০ হাজার পর্যটক এসব জায়গায় ঘুরে নানা জিনিস কিনেছেন। বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তাঁদের উদ্বুদ্ধ করেছে। এখন ২৫ হাজার শিল্পী কাজ করেন। ভবিষ্যতে ১ লক্ষ শিল্পী যুক্ত হবেন। আগে তাঁদের গড় মাসিক আয় ছিল ৫০০ টাকা। এখন সেটা ১৫ গুণ বেড়ে ৭ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে। বছরে শিল্পীদের টার্নওভার ১০০ কোটি টাকা। ইউনেস্কো সবধরনের সহযোগিতা করছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কও এগিয়ে এসেছে। বাংলার বালুচরি শাড়ি ও মসলিন বিশ্বের নজর কেড়েছে। এ রাজ্যে ৫০৮টি ক্লাস্টার করা হয়েছে। নতুন ধরনের নকশা তুলছেন শিল্পীরা। তাঁদের কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নতুন বাউল শিল্পীদের গান সাড়া ফেলে দিয়েছে। শাঁখ শিল্পে বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে। নতুন নতুন কারুশিল্পীদের আমরা খুঁজে বের করছি।’
ড. অমিত মিত্র জানিয়েছেন ‘হস্তশিল্পে নতুন ধরনের নকশা আনতে সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হবে। তৈরি হবে বিশেষ ডিজাইন সেন্টার। সফ্টওয়্যারে নকশা তৈরি করা হবে। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ইউনেসকোর রুরাল ক্র্যাফ্ট হাবের সঙ্গে রাজ্য কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন আর্টিজন ক্রেডিট কার্ডের কথা। ১ লক্ষ ২ হাজার কার্ডে রাজ্য দিয়েছে ৪০৬ কোটি টাকা, ব্যাঙ্ক দিয়েছে ৩৪ কোটি টাকা।’ উল্লেখ্য, ৩ হাজার ১৮৭ জন প্রবীণ শিল্পী প্রত্যেক মাসে ১০০০ টাকা পেনশন পাচ্ছেন। রাজ্য ৬২টি স্টেট ফেয়ার, ১০টা ন্যাশনাল ফেয়ার এবং কিছু আন্তঃরাষ্ট্রীয় মেলাতেও যোগ দিয়েছে। রাজ্যের শিল্পের উন্নয়নের জন্য যে সবরকম ভাবে সরকার সহায়তা করবেন তা আবারও প্রমাণ করলেন বাংলার কাণ্ডারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।