দোরগোড়ায় উৎসবের মরশুম অথচ গাড়ি শিল্পে মন্দা। গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়ামের হিসেব জানাল, দেশের পাইকারি বাজারে যাত্রী গাড়ি, ইউটিলিটি ভেহিক্ল (ইউভি) ও ভ্যান অর্থাৎ সব মিলিয়ে সার্বিক যাত্রী গাড়ির বিক্রি যতটা কমেছে, গত ২২ বছরে তেমন দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, খুচরো বাজারে গাড়ির চাহিদা ও বিক্রি ধাক্কা খেয়েছে এতটাই যে, পাইকারি বাজারে তার জের পড়েছে। শো-রুমে পড়ে থাকার ভয়ে সংস্থার কাছ থেকে গাড়ি কেনা আরও কমিয়েছে ডিলাররা। যার জেরে এই নিয়ে সব রকম গাড়ির বিক্রি কমে গিয়েছে একটানা ন’মাস। আগস্টে আরও গভীর গর্তে আটকে গিয়েছে গাড়ি শিল্প।
গত আগস্টের শেষ দিকেই ব্যবসা চাঙ্গা করতে একগুচ্ছ ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তখনই ওঠে অবিলম্বে জিএসটি কমানোর দাবি। এ বার তা-ই আরও জোরদার হয়েছে। গাড়ি ও তার যন্ত্রাংশে অবিলম্বে কর না-কমালে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে, বলছেন অনেকেই। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, জিএসটি আদায়ের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত সরকারের প্রত্যাশা পূরণ না-হওয়ায় এই কর আদৌ কমানো হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছে যথেষ্ট।
প্রতি মাসে তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনা করে পাইকারি গাড়ি বিক্রির খতিয়ান প্রকাশ করে সিয়াম। সোমবার তারা গত আগস্টের যে হিসেব দিয়েছে, তাতে ব্যবসার করুণ দশার ছবিটা স্পষ্ট। সিয়াম সূত্রের খবর, গত ১৯৯৭-৯৮ সাল থেকে তারা এই হিসেব কষছে। কিন্তু সার্বিক যাত্রী গাড়ি ও আলাদা ভাবে যাত্রী গাড়ির বিক্রির এমন বেহাল অবস্থা আগে কখনও দেখেনি।
বিক্রি কমার জেরে ইতিমধ্যেই উৎপাদন ছাঁটাই করছে সংস্থাগুলি। ফলে তাদের সহযোগী যন্ত্রাংশ শিল্পের বরাতও কমছে। ব্যবসা কমায় প্রায় তিনশো ডিলার ঝাঁপ বন্ধ করেছেন। সব মিলিয়ে এই শিল্পে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কর্মী কাজ খুইয়েছেন। একাংশের হুঁশিয়ারই এখনই পরিস্থিতি না বদলালে আরও অনেক চাকরি যাবে। বিশেষত সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক বৈঠকে জিএসটি ফিটমেন্ট কমিটিও যেখানে এমন কোনও সুপারিশ করেনি। সাধারণত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরে প্রয়োজনে জিএসটি পরিষদের কাছে কর কমানোর সুপারিশ করে যারা।