বীরেন্দ্র সহবাগ ফর্মুলা মেনে রোহিত শর্মাকে টেস্টেও ওপেনার হিসেবে ব্যবহার করার কথা ভাবতে শুরু করেছে ভারত। রবিবার ওয়াংখেড়েতে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দল বেছে নিলেন জাতীয় নির্বাচকেরা। দলে না থেকেও আরব সাগরের পাড়ে সব চেয়ে আলোচিত নাম হিসেবে থেকে গেলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। কিন্তু আরও কয়েকটি চমকও থাকল।
যেমন টেস্টের দলে নেই কোনও অতিরিক্ত ওপেনার। দু’জন নিয়মিত ওপেনার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন কে এল রাহুল এবং মায়াঙ্ক আগরওয়াল। তৃতীয় ওপেনারের জায়গায় লড়াইয়ে থাকা গুজরাতের প্রিয়ঙ্ক পাঞ্চাল এবং বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরনের কেউ ডাক পাননি। তার প্রধান কারণ, রোহিতকে সম্ভাব্য ওপেনার হিসেবে ভাবা হচ্ছে। এই মুহূর্তে টেস্টের মিডল অর্ডারের যা অবস্থা, রোহিতের জন্য জায়গা করা কঠিন। তিনে চেতেশ্বর পূজারা, চারে বিরাট কোহলি, পাঁচে অজিঙ্ক রাহানে। ছয়ে ধোনি-উত্তর যুগের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান যাঁকে ভাবা হচ্ছে, সেই ঋষভ পন্থ। অধিনায়ক কোহলির থিয়োরি, পাঁচ বোলারে টেস্ট ম্যাচ খেলা। সে ক্ষেত্রে মিডল-অর্ডারে রোহিতের জায়গা হতে পারে একমাত্র চার বোলারে খেললে অথবা অজিঙ্ক রাহানেকে বসিয়ে। আবার সহবাগের মতোই তিনি এমনই এক প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যাটসম্যান যে, বাইরে বসিয়ে রাখাও কঠিন। তার উপর বিশ্বকাপে সদ্য পাঁচটি সেঞ্চুরি করে এসেছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট তাই রোহিতকে ওপেনার হিসেবে পরীক্ষা করে দেখতে আগ্রহী। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যেমন ওপেনার বানিয়েছিলেন সহবাগকে এবং বাকিটা ইতিহাস।
একটা বিষয় দেখার ছিল। বিরাট কোহলিকে কি সব ফর্ম্যাটেই অধিনায়ক হিসেবে দেখা যাবে? না কি, শুধু টেস্টের জন্য বিরাটকে অধিনায়ক রেখে ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টিতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে রোহিত শর্মার হাতে? দেখা গেল, নির্বাচকরা বিরাটেই ভরসা রেখেছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিত শর্মা বিরাটের ডেপুটি হিসেবেই থাকছেন। রোহিত থাকছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুটো টেস্টেও। বিশ্বকাপে তিনি যে রকম ফর্মে ছিলেন, তাতে টেস্ট টিমে রোহিতকে না রাখলে সেটা অন্যায় হত।
টিমে ফেরানো হয়েছে বাংলার উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহাকেও। তিনি এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজেই রয়েছেন ভারতীয় ‘এ’ টিমের হয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সেঞ্চুরিও আছে তাঁর। গত বছর জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে চোট পেয়েছিলেন। তারপর দীর্ঘদিন রি-হ্যাব করে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন। খেলেন আইপিএলেও। ঋদ্ধিকে টেস্ট টিমে ফেরানো হবে, এমন ইঙ্গিত ছিলই। ঋষভ টিমে থাকলেও ঋদ্ধিকে প্রথম উইকেটকিপার হিসেবে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জন্য আর এক অভিজ্ঞ উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিকের নাম আর আলোচনায় ওঠেনি। ফিরে এলেন শিখর ধাওয়ানও। বিশ্বকাপে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া শিখর এখন ফিট। তাই সাদা বলের ক্রিকেটে শিখরকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে দ্বিতীয়বার ভাবেননি নির্বাচকরা।