আমেঠিতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর পরাজয় নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন রাজ বব্বর। “আমেঠিতে পরাজয়ের ফলে তিনি পরিবার হারানোর যন্ত্রণা অনুভব করছেন।” এমনই মত উত্তরপ্রদেশ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বরের৷ তিনি আরও বলেন, “আমেঠি রাহুলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও, তিনি নিজে কখনও মুখ ফেরাননি৷ আমেঠির পাশে সব সময় রয়েছেন রাহুল৷”
বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির কাছে প্রায় ৫৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ পরে সাংবাদিক সম্মেলনে স্মৃতির উদ্দেশ্যে তিনি শুধু বলেন, আমেঠির খেয়াল রাখবেন৷ সেই কথার সূত্র ধরেই এদিন রাজ বব্বর বলেন আমেঠির জন্য এত কিছু করেছেন রাহুল৷ কিন্তু মানুষের মন তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছে৷ এই হার রাহুলের কাছে পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছেদের মত৷
এর আগেও কংগ্রেসের এক নেতা বলেছিলেন আমেঠি পুনরুদ্ধারে ফের ঝাঁপাবেন রাহুল গান্ধী৷ আমেঠি এবার তাদের মতামত দিয়েছে৷ ফল কংগ্রেসের বিপক্ষে গিয়েছে৷ কিন্তু রাহুল গান্ধী দমবার পাত্র নন৷ আমেঠি ছেড়ে তিনি কোথাও যাবেন না৷ তাঁর কথায়, ‘‘রাহুল আমেঠির উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন৷ এবং আগামী দিনেও করবেন৷ ২০২৪ সালে তিনি ফের এই কেন্দ্র থেকে জিতে দেখাবেন৷’’
পরিসংখ্যান বলছে ১৯৬৭ সালের পর এই নিয়ে তিনবার আমেঠি গান্ধী পরিবারের হাতছাড়া হয়েছে৷ ১৯৬৭তে আমেঠিতে জয়ের স্বাদ পায় কংগ্রেস৷ তার দশবছর পর ১৯৭৭ সালে সঞ্জয় গান্ধী জনতা দলের কাছে এই আসনে হেরে যান৷ পরে ১৯৮০ সালে তিনি এই কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হন৷ ১৯৮১ সালে বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয়ের মৃত্যু হলে ভাই রাজীব এই কেন্দ্র থেকে দাঁড়ান৷ উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জেতেন৷ তারপর ১৯৮৪ ও ১৯৮৯ সালে এই কেন্দ্র রাজীব গান্ধী ধরে রাখেন৷
১৯৯১ সালে ফের বিপর্যয় নেমে আসে গান্ধী পরিবারে৷ মৃত্যু হয় রাজীব গান্ধীর৷ তাঁর মৃত্যুর পর আমেঠি কেন্দ্রটি খালি হয়৷ সেই কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ান গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ ক্যাপ্টেন সতীশ শর্মা৷ এরপর ১৯৯৮ সালে ফের আমেঠি কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়৷ ওই বছর বিজেপির সঞ্জয় সিং এখানে জিতে যান৷
এক বছর পর ফের আমেঠিতে পালাবদল৷ ১৯৯৯ সালে সক্রিয়ভাবে রাজনীতির ময়দানে নামেন সোনিয়া৷ স্বামীর কেন্দ্র আমেঠি থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে সাংসদ হন৷ পরে ২০০৪ সালে এই কেন্দ্রটি তিনি রাহুলকে ছেড়ে দেন৷ নিজে চলে যান রায়বরেলিতে৷ ২০০৪ থেকে একটানা এই কেন্দ্রে জিতেছেন রাহুল। এবার হেরে যাওয়ায় স্বভাবতই মুষড়ে পড়েছেন তিনি। তবে নতুন উদ্যমে রাহুল আবার ঝাঁপিয়ে পড়বেন আমেঠি উদ্ধারের কাজে, এমনটাই মত কংগ্রেস নেতাদের।