বিগত কয়েকবছর ধরেই একাধিক কেন্দ্রীয় রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে যে দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় প্রায় সবক্ষেত্রেই ‘এগিয়ে বাংলা’। এমনকি পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন, রেশনের মতো একাধিক ক্ষেত্রেই রোল মডেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য। এবার নির্বাচন কমিশনও মমতার বাংলাকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে ঘোষণা করল, এ রাজ্যে টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনা যায় না।
প্রসঙ্গত, টাকার খেলা কোথায় কোথায় চলতে পারে, সেদিকে নজর রাখতে দেশজুড়ে একটি তালিকা তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্য ধরে ধরে প্রস্তুত করা হয়েছে সেই তালিকা। সেই তালিকা ধরানো হয়েছে আয়কর দফতরকে। ইনকাম ট্যাক্স বিভাগ সূত্রে খবর, ওই তালিকায় জানানো হয়েছে, বাংলার ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের একটিও টাকা ছড়ানোর মৃগয়াক্ষেত্র নয়। তবে সেই তালিকা থেকে জানা গেছে, ভোটবাজারে টাকার খেলায় সবচেয়ে এগিয়ে তামিলনাড়ু। দ্বিতীয় স্থানে অন্ধ্রপ্রদেশ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়শই বলেন, এ রাজ্যে উন্নয়নের যে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে, তাতেই আস্থা রাখেন সাধারণ মানুষ। তাই ভোট নিয়ে তাঁর নিয়ন্ত্রিত শাসকদল আদৌ চিন্তিত নয়। টাকা দিয়ে ভোট কেনা যে এখানে সম্ভব নয়, সেই তত্ত্বও শোনা যায় তাঁর মুখে। মমতার সেই দাবিকেই এবার সীলমোহর দিল নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, ‘এক্সপেন্ডিচার সেনসিটিভ’ বা খরচের ব্যাপারে স্পর্শকাতর লোকসভা কেন্দ্রের তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে এ রাজ্যের সবক’টি কেন্দ্রকেই।
সূত্রের খবর, ভোটের দিকে চেয়ে সবচেয়ে বেশি টাকার খেলা চলে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে। এমনটাই জানানো হয়েছে ওই তালিকায়। অন্ধ্রের ২৪টি লোকসভা কেন্দ্র ‘এক্সপেন্ডিচার সেনসিটিভ’। সেই লোকসভা কেন্দ্রগুলির মধ্যে ১১৬টি বিধানসভাতেই টাকার খেলা চলে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। তামিলনাড়ু অবশ্য সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। সেখানে ৩৯টি লোকসভা কেন্দ্রই ভোট জোটাতে টাকা ছড়ানোয় পটু, জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
পিছিয়ে নেই মোদীর রাজ্য গুজরাটও। সেখানে ১৮টি লোকসভা কেন্দ্রকে খরচের নিরিখে স্পর্শকাতর হিসেবে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। সেই কেন্দ্রগুলির আওতায় আছে ২৮টি বিধানসভাকেন্দ্র। তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ঝাড়খন্ড ও বিহারও। আয়কর দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, এর মধ্যে ঝাড়খন্ডের পাঁচটি লোকসভার অন্তর্গত ২৯টি বিধানসভা কেন্দ্র এবং বিহারের ২১টি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ২৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে টাকার খেলা চলে বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।