তুমুল বিতর্কের কেন্দ্রে বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশ। সম্প্রতিই হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত পারধি গোষ্ঠীর ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ‘ডবল ইঞ্জিন’ এই রাজ্যের গুনা এলাকায়। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম দেব পারধি। গত রবিবার বিবাহ হয় তাঁর। বরযাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় চুরির অভিযোগে রাস্তা থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সেই সঙ্গে তাঁর কাকা গঙ্গারাম পারধিকেও গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু রবিবার রাতে ধৃতের পরিবারকে পুলিশের তরফ থেকে খবর দেওয়া হয়, তিনি মৃত। খবর প্রকাশ্যে আসতেই প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর আত্মীয় এবং গ্রামবাসীরা। পুলিশের তরফে দাবি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। প্রথমে তাঁকে ময়ানা হাসপাতালে নেওয়া হলেও পরে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ৪৫ মিনিট চেষ্টার পরেও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকেরা।
মৃতের পরিবার পুলিশের এই দাবি মানতে একেবারেই রাজি হয়নি। তাঁরা মনে করছেন, পুলিশি হেফাজতে তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। কাকা গঙ্গারামকেও এদিন মারধর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হলেও পরিবারের চাপে তাকে আপাতত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহতের পরিবার প্রথমে ভোপালে ময়নাতদন্তের দাবি করলেও পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তদন্তে রাজি হয়। এই ব্যক্তির মৃত্যুর ন্যায়বিচারের দাবি নিয়ে ও অভিযুক্তদের শাস্তি চেয়ে মঙ্গলবার জেলাশাসকের দফতরে যান মৃতের আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামবাসীরা। সেখানেই তাঁরা নগ্ন হয়ে বসে পড়েন। পুলিশ তাঁদের সরানোর চেষ্টা করতেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এরপর পরিবারের মহিলারাও নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন। কেউ কেউ জেলাশাসকের অফিসে শুয়ে পড়েন। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের অফিস চত্বর থেকে সরাতে গেলে শুরু হয়ে যায় বাদানুবাদ ও হাতাহাতি। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ফলে কয়েকজন মহিলা আহত হন। চোট লেগে কয়েকজনের মাথা ফেটে যায়। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন এমন ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই চরম লজ্জাজনক। প্রতিবাদে সরব হয়েছে একাধিক মহল। মুখ পুড়েছে সে রাজ্যের সরকার ও প্রশাসনের।