কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য স্কুল শিক্ষাদফতর। স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে কিংবা কোনও কোচিং সেন্টারে পড়িয়ে অর্থ উপার্জন করে চলেছেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। পাশাপাশি, যে ছাত্রছাত্রীদরা এই প্রাইভেট টিউশন নিচ্ছে তারা বাড়তি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সুতরাং সবাই তা পাচ্ছে না। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই প্রবণতা অব্যাহত। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণের পর বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সেরেছেন স্কুল শিক্ষা দফতরের অফিসাররা। তাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এসেছে। এই বিষয়টি নিয়ে অনেক অভিভাবকেরও আপত্তি আছে। মাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত এই প্রাইভেট টিউশনের চল রয়েছে। এমনকী নীচু শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদেরও প্রাইভেট টিউশন দিয়ে থাকেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এটাই আটকাতে চায় স্কুলশিক্ষা দফতর। স দফতরের কর্তারা বিষয়টি নিয়ে একটি প্রশ্ন তুলেছেন। তা হল, মামলাকারী ‘প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ যে সব প্রমাণ দিয়েছে, তার তদন্ত করবে কে? এই প্রশ্নের কারণ, স্কুলশিক্ষা কমিশনার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং বিদ্যালয় পরিদর্শকদের (ডিআই) অফিস কোনও তদন্তকারী সংস্থা নয়। স্কুলশিক্ষকদের বিরুদ্ধে পড়ুয়ারা এবং অভিভাবকরা টাকা দিয়ে পড়ানোর তথ্য দিয়েছেন। এমনকী দেওয়া হয়েছে ঘটনার ভিডিও–সহ তথ্যপ্রমাণও। কোন আইনে স্কুলশিক্ষা দফতর তদন্ত করবে? উঠছে প্রশ্ন। তাই কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে দায়িত্ব দিতে হবে কলকাতা হাইকোর্টকেই।
এ বিষয়ে মামলাকারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর দাস বলেন, “স্কুলশিক্ষা কমিশনার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং ডিআইদের কলকাতা হাইকোর্ট ৮ সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিতে বলেছে। সেটা না পারলে আমরা কলকাতা হাইকোর্টে, কর্মরত শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করতে এজেন্সি নিয়োগ করতে বলব।” এইসব শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলের কাছেই কোনও ঘর ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট টিউশন দিয়ে থাকেন। আবার অনেকে ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট টিউশন দেন। এতে মোটা টাকা রোজগার হয়। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রধানশিক্ষকের কাছে লিখিত মুচলেকায় জানান, তাঁরা প্রাইভেট টিউশন, বিমা এজেন্সি, শেয়ার মার্কেটে লেনদেন–সহ অন্য কোনও লাভজনক ব্যবসায় যুক্ত থাকবেন না। এখন নেইও। এই নথি ডিআইয়ের কাছে জমা দেন স্কুলগুলির প্রধানশিক্ষকরা। ২০২৪ সালের নথি জমা দেওয়াও হয়েছে। কিন্তু কোনও শিক্ষক অথবা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া অসম্ভব বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।