নাগরিকত্ব বিলের তীব্র বিরোধিতা করে তৃণমূলের দুই বরিষ্ঠ সাংসদ ডিসেন্ট নোট জমা দিলেন যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপির রাজেন্দ্র আগরওয়ালের কাছে। সাফ জানালেন, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে নাগরিকত্ব বিল আনা হচ্ছে। তাই এই বিল পাশ হওয়াই উচিৎ নয়।
প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই এই বিলের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। এমনকি বিজেপির শরিকেরাও এই বিল পাশ করাতে আপত্তি জানিয়েছে। আসামে বিজেপির শরিক আসাম গন পরিষদ বিল পাশ হলে সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসার হুমকিও দিয়েছে। এবার যৌথ সাংসদীয় কমিটির তৃণমূলের ২ সদস্য নাগরিকত্ব বিল নিয়ে নিজেদের আপত্তি নথিভুক্ত করলেন।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে আছে আসাম, বাংলা-সহ বেশ কয়েকটি সীমান্তবর্তী রাজ্য। কয়েক মাস আগেই এই বিলের কারনেই খুন হতে হয় তিনসুকিয়ার ৫ বাঙালিকে। আত্মহত্যা করেন অনেকে। প্রথম থেকেই নাগরিকত্ব তালিকায় নাম না থাকা আসামবাসীদের জন্য চিন্তিত তৃণমূল। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে আসামে প্রতিনিধিদলও পাঠিয়েছিল তারা। এবার বিল পাশ করানোর বিরুদ্ধে নিজেদের আপত্তি নথিভুক্ত করাল তৃণমূল।
এই সব বিষয় যৌথ সাংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানকে জানিয়ে নাগরিকত্ব বিল পাশের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। তারা জানিয়েছে, এই নাগরিকত্ব বিলের ফলে ৪০ লক্ষ মানুষ যাদের নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে তাঁদের মধ্যে ২৮ লক্ষই বাঙালি হিন্দু। ১০ লক্ষ বাঙালি মুসলিম, এবং ২ লক্ষ হিন্দু। এই বিলের কারণে গত ৬ মাসে ২৫ জন বাঙালি আত্মহত্যা করেছেন। বিহার, ঝাড়খন্ড, মণিপুর এবং মেঘালয়ে বাঙালিদের বহিরাগত বলে মনে করা হচ্ছে।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে তৃণমূলের দুই বরিষ্ঠ সাংসদ বলেন, ‘এই বিলের জন্য কোনও প্রকৃত ভারতীয়ের নাম বাদ যাওয়া উচিৎ নয়। এমনকি এই বিলটি পাশ হওয়াই উচিৎ নয়। কারণ, এই বিল আসলে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থ চরিতার্থ করার প্রচেষ্টা। আসাম এবং বাংলার রাজনৈতিক বাস্তবতার ক্ষেত্রে যার কোনও প্রয়োজন নেই’।