ফের ত্রাতার ভূমিকায় এসএসকেএম হাসপাতাল। এবার জনৈক প্রৌঢ়ার নাক প্রতিস্থাপনের পথে চিকিৎসকরা। পুরো নাকটাই পচতে শুরু করেছিল। স্টেজ ফোর ক্যানসারে নাকের ভেতর টিউমার ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সেই মহিলার নাকে পচন ধরে। সেই সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছিল মুখমণ্ডলেও। তাই দেরি না করে গোটা নাকটাই গোড়া থেকে বাদ দেবার সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তারবাবুরা। এখন ওই মহিলার জন্য নতুন নাক তৈরি হচ্ছে। শরীরের নানা জায়গার মাংস-হাড় নিয়ে নতুন নাক গড়ছেন চিকিৎসকরা।
পাশাপাশি, নতুন জীবনও পেতে চলেছেন ৫৯ বর্ষীয়া বুলা চক্রবর্তী। পিজির ইএনটি বিশেষজ্ঞরা, হেড অ্যান্ড নেক ও প্লাস্টিক সার্জন এবং অ্য়ানাস্থেসিওলজিস্ট-সহ বিভিন্ন শাখার চিকিৎসকরা মিলে এই অসাধ্য সাধন করছেন। নতুন নাক তৈরির এই পদ্ধতিকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ‘টোটাল ন্যাজাল রিকনস্ট্রাকশন’। কপাল থেকে মাংস কেটে তা দিয়ে নাক তৈরির পদ্ধতি শুরু হয়েছে, একে বলে ‘ইন্ডিয়ান রাইনোপ্লাস্টি’। আসলে এই পদ্ধতির মূল আবিষ্কর্তা সুশ্রুত। সেই আমলে সুশ্রুত এই অস্ত্রোপচার চালু করেছিলেন। নাকের রিকনস্ট্রাকশন সার্জারির পদ্ধতি ভারতে অতি প্রাচীন।
উল্লেখ্য, চার ধাপে হচ্ছে বুলাদেবীর এই সার্জারি। প্রথম ধাপে পচা নাক বাদ দিয়েছেন ডাক্তারবাবুরা। দ্বিতীয় দফায় গত ১৭ই অক্টোবর কপাল থেকে চামড়া নিয়ে নাকের অবয়ব তৈরি শুরু হয়। নাকের পাটা তৈরির জন্য বুক থেকে তরুণাস্থি সংগ্রহ করা হয়েছিল। তৃতীয় দফায় বুকের আরও কয়েকটি হাড়ের অংশ দিয়ে পাকাপোক্ত করা হয়েছে নাকের পাটা সহ বাকি কাঠামো। সে জন্য দুটি কানের তরুনাস্থিরও ব্যবহার করা হয়েছে। ডাক্তারবাবুরা জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহ পর নাকের পুনর্গঠনের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পূর্ণ হবে। যাঁদের নেতৃত্বে এই অপারেশন হচ্ছে, তাঁদের অন্যতম হলেন প্লাস্টিক সার্জন ডাঃ আদিত্য কানোই ও হেড অ্যান্ড নেক সার্জন ডাঃ গনেশ আগরওয়াল। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই কাজ যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।