লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছিলেন বেশ কিছুদিন। রবিবার সবার অলক্ষ্যেই চিরবিদায় নিলেন বিশিষ্ট নাট্যকার তথা অভিনেত্রী শাঁওলি মিত্র। এদিন দুপুরে নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তী নাট্যকার শম্ভু ও তৃপ্তি মিত্রর কন্যা। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন। এরইমধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্বের।
বাংলা, ইংরাজি-সহ বিভিন্ন ভাষায় নাট্যজগতে নিজের ছাপ ছেড়েছেন শাঁওলি মিত্র। বাংলায় পালাবদলের সময় আরও অনেক বিশিষ্ট বিদ্বজ্জনের সঙ্গে পথে নেমে শাসকের বিরোধিতা করেছিলেন শাঁওলি মিত্র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে যেন এক কাছের মানুষকেই হারালেন, শোকবার্তায় এমনটাই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বার্তায় মমতা লেখেন, ‘বাংলা নাট্যজগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং প্রখ্যাত মঞ্চশিল্পী শাঁওলি মিত্রের প্রয়াণে আমি গভীর ভাবে শোকাভিভূত বোধ করছি’।
সঙ্গে মমতা আরও লিখেছেন, ‘প্রবাদপ্রতিম শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের কন্যা শাঁওলি মিত্র বাংলা অভিনয় জগতে মহীরুহ ছিলেন। ‘নাথবতী অনাথবৎ’ বা ‘কথা অমৃতসমান’ এর মতো সৃষ্টিকর্ম বাংলার লোকমানসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শাঁওলি মিত্র আমার বহুদিনের সহযোগী ছিলেন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তিনি আমার সঙ্গে একসঙ্গে ছিলেন। আমি রেলমন্ত্রী থাকার সময় তিনি আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন। পরে আমরা দায়িত্বে এলে কিছুদিন পর তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি হন এবং দায়িত্বের সঙ্গে মূল্যবান কাজ করেন। বাংলার সরকার তাঁকে ২০১২ সালে বঙ্গবিভূষণ ও ২০১৪ সালে দীনবন্ধু পুরস্কার দেয়’।
একইসঙ্গে তাঁর বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘শাঁওলি দির ইচ্ছাক্রমে তাঁর প্রয়াণের খবর আমাকে শেষকৃত্যের পর দেওয়া হয়। আমি কিন্তু কাছের মানুষ হিসাবে তাঁকে মনে ধরে রাখলাম। আমাদের বহুদিনের সহকর্মী এবং সুহৃদ হিসেবে তিনি আমাদের মনের মণিকোঠায় থেকে যাবেন। আমি শাঁওলিদির পরিবার- পরিজন ও অগণিত গুণগ্রাহীকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি’।