সম্প্রতি সাধু-সন্তদের বিভিন্ন সংগঠন সম্মিলিতভাবে দাবি তুলতে শুরু করেছে যে,পুরীর নাম বদলে করা হোক জগন্নাথপুরী। ক’দিন আগে শ্রীক্ষেত্রে এসে এই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও। যদিও, পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতীর মত, নাম বদলের কোনও প্রয়োজন নেই। শুক্রবার শঙ্করাচার্য জানান, “পুরী নিজ নামেই জগন্নাথধামের পরিচয় বহন করে। জগন্নাথপুরীকে গোটা বিশ্ব পুরী নামেই চেনে। এটাই তার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। তাই, পুরী পীঠের নাম বদলে জগন্নাথপুরী করার প্রয়োজন আছে বলে বলে আমি মনে করি না।” পাশাপাশি তিনি জানান, দেশের সাতটি ধামের নামের শেষে পুরী যুক্ত রয়েছে। যেমন, দ্বারকাপুরী, মথুরাপুরী ও অযোধ্যাপুরী। কিন্তু জগন্নাথপুরী (অষ্টম ধাম) শুধু পুরী নামেই প্রভু জগন্নাথের প্রতিনিধিত্ব করে। পুরীর তাৎপর্য এখানেই।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কেদারনাথ সফরের দিন পুরীতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সেদিন তিনি বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের তরফে পুরীর নাম বদলের দাবি জানানো হচ্ছে। পুরীর নাম বদলে জগন্নাথপুরী করা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। নাম বদলের দাবিকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি শঙ্করাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর আশীর্বাদও নিয়েছিলেন তিনি। পুরীর নাম বদলের পক্ষে সওয়াল করেছেন শ্রী শ্রীক্ষেত্র সূচনার সম্পাদক রাজেশকুমার মোহান্তিও। তাঁর বক্তব্য, বহু শতাব্দী প্রাচীন পুরাণগুলিতে জগন্নাথপুরী হিসেবেই পুরীর উল্লেখ রয়েছে। কবি জয়দেবের গীত গোবিন্দ থেকে ১৮২৩ সালের গেজেটারেও এই শহরকে জগন্নাথপুরী বলা হয়েছে। সম্প্রতি পুরীতে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ৩০টিরও বেশি সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাধু-সন্ত, সেবাইত ও বিশিষ্টজনেরা। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, পুরীর নাম বদলের দাবিতে সব নথি সহ একটি স্মারকলিপি তৈরি করা হবে। তা পেশ করা হবে পুরীর জেলাশাসক, সাংসদ, জেলার সব বিধায়ক, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে। পাশাপাশি, একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শীঘ্রই বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে এবিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলবে ওই কমিটি। সেই সঙ্গেই পুরীর নাম জগন্নাথপুরী করার জন্য সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখবেন কমিটির সদস্যরা। এরই মধ্যে জগন্নাথ সেনার দাবি, পুরী স্টেশনের নাম বদলের মাধ্যমে নতুন নামকরণের কাজ শুরু হোক।