২০২১ সালেই তাঁর রাজনৈতিক সফরের ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে। জীবনে প্রথম নির্বাচন লড়েছিলেন বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে। শেষ নির্বাচনও লড়লেন বালিগঞ্জ থেকে। ৫০ বছরের এক বর্ণময় বৃত্ত সম্পূর্ণ করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন আপামর অভিজাত্যে মোড়া বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কালীপুজোর রাতে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী।
১৯৪৬ সালের ১৪ জুন বজবজের সারেঙ্গাবাদে জন্ম গ্রহণ করেন সুব্রত মুখার্জি। মফস্বলের ছেলে হলেও খুব সহজেই কলকাতায় খাপখাইয়ে নেন নিজেকে। বলা ভালো, সত্তরের দশক থেকে শহরটাকে শাসন করতে শুরু করেন তিলোত্তমার প্রাক্তন মহানগরীকে।
শ্রমিক সংগঠন নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে ২০০০ সালে হাত শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। প্রসঙ্গত, আজকের মুখ্যমন্ত্রীর সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ কার্যত সুব্রত মুখার্জির হাত ধরেই।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যখন যোগমায়া দেবী কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের নেত্রী, সুব্রত সেই সময় ছাত্র পরিষদের সভাপতি। একদিন ডেকে পাঠালেন মমতাকে। তাঁর কাজের প্রশংসা করার সঙ্গে সঙ্গে আরও বড় পরিসরে রাজনীতি করার জন্য মমতাকে আহ্বান জানালেন তিনি।
এরপর ১৯৮৪ সালে সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী সোমনাথ চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে প্রার্থী খুঁজছে কংগ্রেস। সেই সময় রাজীব গান্ধী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বলেছিলেন যাদবপুরের জন্য কোনও লড়াকু প্রার্থীকে টিকিট দিতে। প্রণবের কাছে মমতার নাম সুপারিশ করেছিলেন সুব্রত। মমতাই যে যাদবপুরের জন্য যোগ্যতম প্রার্থী তা প্রণবের কাছে জোড় গলায় জানিয়েছিলেন সুব্রত।
২০০০ সালে কংগ্রেস বিধায়ক থাকাকালীন তৃণমূলের টিকিটে পুরভোট লড়ে কলকাতার মেয়র হন তিনি। অনেকের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে সুব্রতই ছিলেন শ্রেষ্ঠ মেয়র। এক কথায় কলকাতা শহরকে ঢেলে সাজিয়ে ছিলেন। তিনি মেয়র থাকাকালীন কলকাতা পুরসভার অন্যতম কাজ, শহরের জায়গায় জায়গায় পথচারীদের জন্য শৌচাগার তৈরি। রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে উন্নয়নের কাজে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।