কলকাতা হাইকোর্টে রথের চাকা বসে যেতেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে তালমিলের অভাব ফের প্রকাশ্যে চলে এল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ভিন্নমত ঘিরে বিভ্রান্তিতে পড়লেন বিজেপি কর্মীরাও।
আজ ৭ ডিসেম্বর কোচবিহারে বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচীর সূচনা হওয়ার দিন ছিল। এই রথযাত্রার উদ্বোধন করার কথা ছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে বিজেপির রথযাত্রা এখন বিশ বাঁও জলে। অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, কোচবিহারে তিনি আসছেন না। কিন্তু রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সেকথা মানলে তো!
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ইঙ্গিত দিয়েছেন, প্রস্তুতি সারা। রথযাত্রা হবেই। তাঁর দাবি ছিল, ‘শুক্রবার রথযাত্রা হবে না। কিন্তু অমিত শাহের সভা হবেই’। কী করে সভা হবে? দিলীপের জবাব, সভা নিয়ে তো মামলা চলছে না। আদালত রথযাত্রা নিয়ে রায় দিয়েছে। তাই সভা হবেই। কিন্তু এখন আমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি সভা করতে কোচবিহারে আসছেন না। তাই স্বাভাবিক প্রশ্ন, এরপরেও সভা হবে কী করে?
এদিকে দিলীপের দিলীপের দাবি নাস্যাৎ করে দিলেন বাংলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর কথায়, ‘সভা বা রথযাত্রা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব ডিভিশন বেঞ্চের রায় আসার পরে’। অর্থাৎ রথযাত্রার সঙ্গে সভাও যে হবে না সেটা স্পষ্ট।
এখন প্রশ্ন, বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা দুরকম কথা বলছেন কেন? দুজনের মধ্যে কি কথা হয় না?
বিজেপির অন্দরের খবর, কৈলাস এবং দিলীপ আলাদা দুই লবির নেতা। বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে মুকুল রায়ের সম্পর্ক ভালো। আর দিলীপ ঘোষের সঙ্গে অরবিন্দ মেননের। তাই দুই লবির মধ্যে প্রায়ই খটাখটি লেগে যায়। এর আগেও দু’পক্ষ ঝামেলায় জড়িয়েছে। লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীদের টিকিট দেওয়া নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল। রথযাত্রা নিয়ে আবার এল। দুই নেতার এমন কোন্দলের জেরে বিভ্রান্তিতে বিজেপি কর্মীরাও।
প্রসঙ্গত, রথযাত্রা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ৯ জানুয়ারি। তাই নতুন বছরের প্রথম মাস পর্যন্ত বিজেপির রথযাত্রা বা সভা কোনওটাই হচ্ছে না সেটা স্পষ্ট। এদিকে অমিত শাহও জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত বাংলায় সভা করতে তিনি আসছেন না। ফলে দিলীপ ঘোষ যতই ‘সভা হচ্ছেই’ বলে দাবি করুন বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচী বা সভা এখন বিশ বাঁও জলে।