কেউ ৮০ ছুঁই ছুঁই। কেউ সবে মাত্র ৭০-তে পা দিয়েছেন। কেউবা আবার ৬৫। কমবেশি প্রত্যেকেই বয়সের ভারে ন্যুজ। যাদের পক্ক কেশ বলাই যায়। তবে সাদা চুলের মাঝেও দু-একজনের মাথায় কালাে-সাদার সংমিশ্রন অবশ্য দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কুচকুচে কালো মাথা খুঁজতে গেলে হলফ করে বলা যায় দূরবীন সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক! এই বিবরণটি ৬ ডিসেম্বর শহরে বামেদের সম্প্রীতির মহামিছিল(নামে মহামিছিল, সংখ্যায় শত খানেক হবে)। মিছিলের থাকা ব্যক্তিবর্গরা অবশ্য কম বেশি সবার কাছে পরিচিত। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, স্বপণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কার্তিক পাল, নরেন চট্টোপাধ্যায়, মনােজ ভট্টাচার্য, সমীর পূততুন্ডরা। উল্লেখযােগ্য এবং লক্ষ্যণীয় বিষয় হল এঁদের প্রত্যেকের হাতেই মােটা বাঁশের লাঠিতে দলীয় পতাকা বেঁধে কাঁধে নিয়ে পুরাে রাস্তা হাঁটা। শেষ কবে স্বয়ং সূর্য বাবু-বিমান বাবুদের দলীয় কর্মীরা পতাকা কাঁধে নিয়ে রাজপথে হাঁটতে দেখেছে তা স্মরণে আনা দুষ্কর ব্যাপার। এহেন চিত্র দেখে রাস্তার পাশ থেকে কাউকে কাউকে টিপ্পনি কেটে বলতেও শােনা গেল, এ যেন পক্ককেশদের লাঠি লাঠি খেলা! ঠেলায় পড়লে যে আলিমুদ্দিনের দেবতারা লাঠি কাঁধে হাঁটতে শুরু করেন তাও এদিন স্পষ্ট হল। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, ঘটা করে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে কিন্তু সেই মিছিলে সেভাবে তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি কোথায়? কোথায় মহিলা কর্মিরা? যতদূর চোখ যায় শুধুই পক্ককেশদের লং মার্চ। তাহলে কি রাজ্যের প্রাক্তন শাসকদের থেকে একেবারেই মুখ ঘুরিয়েছে নব প্রজন্ম ও মহিলারা।
অথচ দলের মধ্যে এখনও খাতায়-কলমে জ্বলজ্বল করছে ছাত্র ফ্রন্ট, যুব ফ্রন্ট, মহিলা সমিতি। তাহলে এই শাখা সংগঠনগুলির সদস্যরা কোথায়। সবই কি তাহলে লােকদেখানাে! যদিও এমন কথা মানতে নারাজ। সিপিএম সহ বামেরা। তাদের দাবি, মিছিলে ছাত্র-যুব-মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতাে। মিছিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, বিভাজনের রাজনীতি করে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। লােকসভা ভােটের আগে আবারও সেই একই পদ্ধতি শুরু করেছে। এই গুটি কয়েক লােক নিয়েই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র কয়েক কদম এগিয়ে বলেন, সংঘ পরিবার যে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে, তার বিরােধীতা করার পাশাপাশি ব্রিগেড সমাবেশরও মহড়া হয়ে গেল এই মিছিল থেকে। প্রশ্ন উঠছে এই মিছিল যদি ব্রিগেডের মহড়া হয়, তাহলে ৩রা ফেব্রুয়ারি সমাবেশ কেমন হবে তা বােঝা যাচ্ছে।
সৌজন্য : খবর ৩৬৫দিন