এবার তথ্য কমিশনকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানাতে চাইছে কেন্দ্র। তাই এবার হানা তথ্যের অধিকারে।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই মোদী সরকার তথ্যের অধিকার আইনে সংশোধনী বিল পেশ করতে চলেছে সংসদে। এর আগে গত বর্ষাকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভায় তথ্যের অধিকার (সংশোধনী) বিল আনার চেষ্টা করেছিল সরকার। কিন্তু, তথ্য–অধিকার কর্মী এবং বিরোধীদের প্রবল বিরোধিতায় শেষমেশ পিছোতে হয়। তাই এবার বাড়তি সতর্ক মোদী সরকার। খসড়া বিলের সংশোধনীগুলি সম্পর্কে কোনও তথ্য যাতে প্রকাশ্যে না আসে তা নিশ্চিত করতে মরিয়া কেন্দ্র। তাই বিলের যাবতীয় প্রস্তাব কঠোরভাবে গোপন রাখা হয়েছে।
তথ্যের অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের অভিযোগ, মোদী সরকার যে বিল আনতে চলেছে, তাতে একদিকে যেমন তথ্য কমিশনের স্বাতন্ত্র খর্ব হবে, সেইসঙ্গে সংবিধান প্রদত্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ। লঙ্ঘিত হবে কেন্দ্রীয় আইন কমিশনের সুপারিশও। সূত্রের খবর, কেন্দ্র ও রাজ্যের মুখ্য তথ্য কমিশনার ও কমিশনারদের মাসিক বেতন ও চাকরির মেয়াদেও বেশ কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব আনছে মোদী সরকার। তথ্য কমিশনারকে রাষ্ট্রমন্ত্রীর মর্যাদা দিতেও ঘোর আপত্তি আছে তাদের। কমিশনারের কাজের মেয়াদ ৫ বছর থেকে নিজেদের পছন্দমতো করতে চাইছে সরকার। বেতন ও অন্যান্য ভাতা বিষয়ে সরকার যাতে ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করতে পারে, সেই পথও খোলা রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে কড়া আইনটিকে ঠুঁটো করে দেওয়াই সরকারের লক্ষ্য। মনে করা হচ্ছে, এমনটা হলে, তথ্য কমিশন তার মর্যাদা ও ক্ষমতা হারাবে।
বিষয়টি নিয়ে গলা চড়িয়েছেন আরটিআই কর্মী তথা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ন্যাশনাল ক্যাম্পেন ফর পিপল্স রাইট টু ইনফর্মেশন’-এর সদস্য অঞ্জলি ভরদ্বাজ ও বেঙ্কটেশ নায়ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় অঞ্জলির অভিযোগ, ‘স্বচ্ছ আইনের অস্বচ্ছতা’ লুকোতেই এমনটা করছে মোদী সরকার। যদিও ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি সমস্ত মন্ত্রকের সচিবদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, প্রতিটি মন্ত্রক ও দপ্তরকে বিল পেশের ন্যূনতম একমাস আগে প্রস্তাবিত বিষয়গুলি জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে। সে সবের পরোয়াও করছে না মোদী সরকার।