এবার বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ শুরু হল নদীয়ার কৃষ্ণনগরেও। সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত। জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতেই গতকাল বিজেপির নদীয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা অফিসের ভিতরেই কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী মহাদেব সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন ‘আদি’ বিজেপিরা। যা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
বিক্ষুব্ধদের দাবি, অবিলম্বে মহাদেব সরকারকে প্রার্থীপদ থেকে সরানো হোক। তার পরিবর্তে যে কাউকে প্রার্থী করা হোক। কারণ মহাদেব সরকার চিটফান্ড-সহ একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, যা স্থানীয় মানুষ, এমনকি দলীয় নেতৃত্বও জানে। তাঁকে না সরালে জেতা আসন হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই মহাদেব সরকারের অপসারণ নিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ, দলীয় নেতৃত্বের বাড়ি ঘেরাও থেকে শুরু করে দলীয় কার্যালয় ঘেরাও বেশ কয়েকবার হয়েছে।
ক্ষোভ নিবারণে জেলা নেতৃত্ব বহুবার বিক্ষুব্ধ কর্মীদের নানারকম আশ্বাস দিলেও তা কাজে দেয়নি। এখনও অবধি নিজেদের দাবিতেই অনড় রইলেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের মধ্যে সাক্ষীগোপাল বিশ্বাস, শঙ্কর মজুমদার, আনন্দ সর্দার, ভগীরথ ঘোষ, অমল মন্ডলরা বলেন, লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে হারানোর মূল কারিগর ছিল এই মহাদেব সরকার। তিনি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে টাকা খেয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রভাবিত করেছিলেন। চিটফান্ড কেলেঙ্কারির সঙ্গেও মহাদেববাবু জড়িত রয়েছেন। তার অপরাধের বিষয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষও জানেন।
জেলা বিজেপি নেতৃত্ব সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থীপদের দাবিদার ছিলেন প্রায় ২০ জন। তাদের মধ্যে কৃষ্ণনগর উত্তর সাংগঠনিক জেলার বিভিন্ন পদে থাকা একাধিক ব্যক্তির নাম ছিল। দলীয় তরফে প্রার্থী নির্বাচনে যে সার্ভে হয়েছিল, তাতেও কয়েকজন নেতার নাম উঠে আসে। কিন্তু প্রার্থী তালিকায় সেই নামগুলির কোনওটিই আর পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে তারপর থেকেই চাপা ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে।
তবে বিক্ষোভকারীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহাদেব সরকার। তিনি বলেন, যেই অভিযোগগুলো আমার বিরুদ্ধে তোলা হচ্ছে তার কোনও প্রমাণ তারা দেখাতে পারবেন না। তাছাড়া, হাতেগোনা কয়েকজন পছন্দ না করতেই পারেন। কিন্তু প্রচারে নেমে আমি সাধারণ মানুষের থেকে যে সাড়া পাচ্ছি তাতে বিক্ষোভের বিষয়টি গুরুত্ব পায় না। যদিও উত্তর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন অধিকারী বলেন, মিটিং থাকায় আমরা পার্টি অফিসে ছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে কয়েকজন এসেছে সেইসময় তাদের দাবিপত্র জমা দেয়। তাদের দাবির বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। বাকিটা তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।