শেষ কয়েক বছর মুক্তি পেয়েছে বেশ কিছু ক্রীড়াতারকার বায়োপিক। সেগুলি বেশ সাড়া
পেয়েছে দর্শক ও সমালোচক মহলে। মিলখা সিংহ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, আজহারউদ্দিন, শচীন তেণ্ডুলকর, মেরি কম, এঁদের জীবন নিয়ে ছবি হয়েছে বলিউডে। সাম্প্রতিক অতীতে হকি তারকা সন্দীপ সিংহকে নিয়েও ছবি হয়েছে। শুটিং শুরু হয়েছে ভারতীয় তারকা শাটলার সাইনা নেহওয়ালের বায়োপিকেরও। এবার ফের আরেকটি বায়োপিক তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে বলিউড। যে ছবির প্রাণপুরুষ আরেক কিংবদন্তি বিশ্বনাথন আনন্দ। গত শুক্রবারই ৫১ বছরে পা দিয়েছেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এই ভারতীয় দাবাড়ু। এবার তাঁরই জীনকাহিনী আসতে চলেছে বড় পর্দায়।
বলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থা সানডিয়াল এন্টারটেনমেন্ট-এর সঙ্গে আনন্দের চুক্তি সই হয়েছে। সম্প্রতি বায়োপিকের জন্য বেশ কয়েকটি প্রযোজনা সংস্থা থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন আনন্দ। শেষ পর্যন্ত সানডিয়ালকেই বেছে নেন গ্র্যান্ডমাস্টার। তাঁর ভূমিকায় কে অভিনয় করবেন, বা ছবির অন্য চরিত্রে কারা থাকবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ২০২১ সালে ছবিটি মুক্তি পাবে। পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন আনন্দ এল রাই। যিনি ‘রাঞ্ঝনা’, ‘তনু ওয়েডস মনু’, ‘তনু ওয়েডস মনু রিটার্নস’-এর মতো জনপ্রিয় ছবি পরিচালনা করেছেন। বছরদুয়েক আগে অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত বক্সিং নিয়ে তৈরি ছবি ‘মুক্কাবাজ’-এর অন্যতম প্রযোজকও ছিলেন আনন্দ এল রাই।
রিয়েল লাইফের পাশাপাশি রিল লাইফেও সুপারহিট তকমা জোগাড় করে নিয়েছে দাবা।সম্প্রতি দাবা নিয়েই নেটফ্লিক্স তৈরী করেছে মিনি সিরিজ, দ্য ক্যুইন্স গ্যামবিট (The Queen’s Gambit)। যেটি বিশেষ প্রশংসিত হয়েছে সমালোচক ও দর্শকমহলে।
প্রসঙ্গত, নিজস্ব আক্রমণাত্মক খেলার ধরন দিয়ে নয়ের দশকে দাবায় সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজত্বে থাবা বসান বিশ্বনাথন আনন্দ। এরপর ভারতের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া থেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দীর্ঘ অভিযান, এই রূপকথাময় যাত্রাই তুলে ধরা হবে সেলুলয়েডে। ছবিটিতে যেমন আনন্দের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের দুর্দান্ত কিছু ম্যাচের ঝলক দেখানো হবে, তেমনি তুলে ধরা হবে তাঁর জীবনের নানান দিকগুলিও।
দীর্ঘ তিন দশক ধরে দাবা সার্কিটে রয়েছেন আনন্দ। এখনও প্রথম ১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন। । লকডাউনে যখন অন্য সব খেলার মতো দাবাও বন্ধ, আনন্দ বসে থাকেননি। একটি অ্যাপে তিনি স্ত্রী অরুণাকে দাবা খেলা শিখিয়েছেন। প্রচুর ভারতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার ও ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারের মেন্টরের ভূমিকায় দেখা গেছে তাঁকে।
এদেশে দাবার জনপ্রিয়তা অর্জন প্রায় পুরোটাই তাঁর হাত ধরে। তাঁর পর একাধিক গ্র্যান্ডমাস্টার পেয়েছে এই দেশ। খেলার আগ্রহ ছড়িয়ে পড়েছে ছোটদের মধ্যে। আনন্দের মতো তারকার জীবনযুদ্ধ দেখতে দারুণ আগ্রহী ও উন্মুখ হবেন দর্শক, এমনটাই আশা রাখছেন ছবি নির্মাতারা।