‘কারও ব্যক্তিগত সম্পর্কে বাধা দেওয়া যায় না। তাহলে ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়। দু’জন মানুষের পরস্পরকে বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা আছে।’ সম্প্রতি এক মামলায় এমনই রায় দিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এবার সেই একই কথা বলল দিল্লী হাইকোর্ট। কিছুদিন আগে সুলেখা নামে এক তরুণী ভালবেসে বাবলু নামে এক যুবককে বিবাহ করে। মেয়েটির বাড়ির তাতে ঘোর আপত্তি ছিল। তাঁর বাবা-মায়ের বক্তব্য ছিল, সুলেখা নাবালিকা। বাবলু তাকে অপহরণ করেছেন।
দিল্লী হাইকোর্টের বিচারপতি বিপিন সাংঘি এবং রজনীশ ভাটনগর ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেন। সে জানায়, তার বয়স ২০। অর্থাৎ সে নাবালিকা নয়। তখন বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, পুলিশ যেন পাহারা দিয়ে সুলেখাকে তার স্বামীর কাছে পৌঁছে দিয়ে আসে। তারপরই বিচারপতিরা বলেন, কোনও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা যেখানে খুশি, যার সঙ্গে খুশি থাকতে পারেন। বর্তমানে লাভ জেহাদ নিয়ে বিতর্ক চলছে দেশ জুড়ে। বিজেপি শাসিত কয়েকটি রাজ্য লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে আইন করতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি হাইকোর্টের রায় বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিরা নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন, পুলিশ সুলেখার বাবা-মাকে বোঝাবে, তাঁরা যেন মেয়ে-জামাইকে হুমকি না দেন। আইন যেন নিজেদের হাতে তুলে না নেন। কিছুদিন আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি এই ধরনের রায় দিয়েছিল। গতবছর আগস্টে উত্তরপ্রদেশে সালামত আনসারি নামে এক মুসলিম যুবক প্রিয়াঙ্কা খারওয়ার নামে এক হিন্দু তরুণীকে বিবাহ করেন। প্রিয়াঙ্কার বাবা-মা সালামতের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। এলাহাবাদ হাইকোর্ট ওই মামলা বাতিল করে দিয়েছে। হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ বলেছে, ‘কারও ব্যক্তিগত সম্পর্কে বাধা দেওয়া যায় না। তাহলে ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়। দু’জন মানুষের পরস্পরকে বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা আছে।’