বেফাঁস মন্তব্য করায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তিনি কখনও বলেন, ‘মহাভারতের সময়ে স্যাটেলাইট অস্তিত্ব’, আবার কখনও নিদান দেন, ‘শিল্প আনার থেকে গো-পালন ভালো’। ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে যখনই মুখ খুলেছেন বিপ্লব দেব, তখনই জন্ম নিয়েছে নতুন নতুন বিতর্ক৷ এবার তাঁর কথাকে হাতিয়ার করে, তাঁকেই বিঁধছেন বিরোধীরা। সম্প্রতি বিজেপির এক সভায় দলের কর্মীদের চাঙ্গা করতে বিপ্লব দাবি করেছেন, আগামী ৩০-৩৫ বছর অন্য কোনও দলই ক্ষমতায় আসবে না ত্রিপুরায়। কেন্দ্রে-রাজ্যে জোড়া ইঞ্জিনের সরকার আছে বলেই ত্রিপুরায় কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে, না হলে কিছুই করা যেত না।
বিপ্লবের এই কথার সূত্র ধরেই রাজ্যের প্রাক্তন অর্থ ও পূর্তমন্ত্রী এবং বিধায়ক বাদল চৌধুরী মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্র রাজ্যকে যে অর্থ দিতে দায়বদ্ধ, সেটাই দেয়। তাঁর প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী যে বলছেন অতিরিক্ত টাকা এনেছেন, এত টাকা তবে কোথায় ব্যয় হয়েছে? বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার অ-বিজেপি দল শাসিত রাজ্যগুলিকে চাহিদা মতো অর্থ বরাদ্দ করে না। বাদলের মতে, ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বাড়তি টাকা পাওয়ার কথায় ওই অভিযোগটিই সত্য প্রমাণিত হল। বিপ্লব দেব পরিষ্কার করে দিয়েছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্য না হলে কেন্দ্রের থেকে ঠিক ভাবে সাহায্য পাওয়া যায় না।’
বিজেপির ওই সভায় বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিপ্লব বলেছেন, ‘আমি এখনও বলা শুরু করিনি। যখন বলা শুরু করব, তখন বিরোধীদের মুখে কুলুপ এঁটে পার্টি অফিসে ঢুকে বসে থাকতে হবে।’ তাঁর দাবি, আগামী ৩০-৩৫ বছর রাজ্যে অন্য কোনও পার্টির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই। আগামী ২০২৩ বিধানসভা ভোটে বিজেপির সামনে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই রাজ্যের কোনও রাজনৈতিক দলের এর জবাবে বাদল বলেছেন, ‘একটু অপেক্ষা করুন, কে দাঁড়ায়, কে সামনে থাকে তা দেখতে পাওয়া যাবে।’ তাঁর মতে, গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা বা আস্থা নেই বিজেপির। তারা সংবিধানও মানতে চায় না। এই সমস্ত কথা বিপ্লব দেবের মতো নেতার মুখেই মানায়।