একরত্তি শরীরে থাবা বসিয়েছে অতি বিরল রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রপি। যা কিনা দশ লক্ষের মধ্যে একজনের হয়। এবং রোগীর দেহে সামান্য সংক্রমণও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। গোটা কোভিড পর্বে তাই একদিনও মেয়েকে বাড়ির বাইরে বের করেননি। কিন্তু প্রতিবন্ধী শংসাপত্র করাতে এবার তো ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেই হবে!
বাঁশদ্রোণীর দেবাশিস ঘোষ ও মৌমিতা ঘোষের। ওঁদের একমাত্র মেয়ে দেবস্মিতা স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রপিতে আক্রান্ত। প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট ওকে যেতে হবে টালিগঞ্জের এমআর বাঙুর হাসপাতালে, যেখানে কি না কোভিডের চিকিৎসা চলছে! সাধারণ হাসপাতালই যার পক্ষে অতীব বিপজ্জনক, কোভিড হাসপাতালে গিয়ে সে কীভাবে ডাক্তারবাবুদের সামনে গিয়ে নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার প্রমাণ দেবে?
হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমে মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষার কথা ভাবে ঘোষ দম্পতি। সেই মতো চিঠি লেখেন মুখ্যসচিবকে। তারপর সমবেত প্রয়াস ও সদিচ্ছার আঁচে প্রশাসনিক লাল ফিতের বরফ গলে। মানবিকতার তাগিদে শিথিল হয় সরকারি নিয়ম। ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমেই সম্প্রতি মেডিক্যাল টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে দেবস্মিতার। তৈরি হয়েছে নজির। প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট পেতে আমজনতাকে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হবে, এটাই দস্তুর। গড়ে মাস তিনেক সময় লাগে। সেখানে এত দ্রুত বিকল্প উপায়ে শংসাপত্রের পুনর্নবীকরণ হওয়ায় দেবস্মিতার পরিবার আপ্লুত।
মৌমিতার কথায়, “অতি বিরল রোগে আক্রান্ত। প্রায় ১০০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধিকতাযুক্ত। নিজে বসতেও পারে না। ডিস্যাবিলিটি সার্টিফিকেটটা না হলে খুব সমস্যা হত।” অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি সন্দীপবাবুও।