একদিকে যেমন রোজই দ্রুত হারে বাড়ছে সংক্রমণ, তেমনি আবার একনাগাড়ে লকডাউন চালিয়ে যাওয়াও রাজ্যবাসীর পক্ষে সুখকর নয়। তাই দুদিক বজায় রেখেই মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকে তিনি সিদ্ধান্ত নেন প্রক্ষিপ্ত লকডাউনের। আজ সেই লকডাউনের প্রথম দিনেই কড়াকড়ি কলকাতায়। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলছে নাকা তল্লাশি। প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরলেই চলছে ধরপাকড়। জেলা থেকে কলকাতায় ঢোকার সমস্ত রাস্তা নজরদারির আওতায় রয়েছে। বাজার-দোকান বন্ধ। টহল দিচ্ছে পুলিশ ভ্যান। শ্যামবাজার থেকে বেহালা, গড়িয়াহাট, রাসবিহারী, টালিগঞ্জ, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-সহ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় একই ছবি ধরা পড়ছে। শুধু কলকাতাতেই নয়, জেলাতেও পুলিশি নজরদারির রাশ আলগা হয়নি। রাস্তায় চলছে পুলিশি টহলদারি।
রাজ্যের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে সপ্তাহে দু’দিন। আজ, সারাদিনই থাকবে পুলিশি নজরদারি। এ সপ্তাহে শনিবারও লকডাউন। আগামী সপ্তাহে বুধবার এবং আরও একটি দিন লকডাউন থাকবে রাজ্য জুড়ে। এ দিন যাঁরা গাড়ি নিয়ে বেরচ্ছেন, তাঁরা কোথায় যাচ্ছেন, কী কারণে বেরিয়েছেন তা জানতে চাইছেন পুলিশকর্মীরা। দেখতে চাওয়া হচ্ছে পরিচয়পত্র। লকডাউনে শুধু মাত্র জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। জেলা থেকে কলকাতায় ঢোকার মুখে সমস্ত গাড়িকে আটকানো হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ এলে, তাঁকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী কলকাতার রাস্তায় নেমেছে। রাজাবাজার, পার্ক সার্কাস এবং খিদিরপুর এলাকাতে অলিগতিতে ঢুকে পুলিশি টহল চলছে।শুধু তাই নয়। একদিকে যেমন পথে নেমে নজরদারি চালানো হচ্ছে। তেমনই লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকেই সিসি ক্যামেরায় নজর রেখেছেন পুলিশ অফিসারেরা।
প্রসঙ্গত, লকডাউনের প্রথম দফার মতোই এ বারও ঠিক তেমনই পুলিশি কড়াকড়ি রয়েছে। লকডাউনে বেসরকারি এবং সরকারি অফিস বন্ধ। পরিবহণও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। এদিন তাই বাস-অটো-ট্যাক্সি রাস্তায় নামেনি। অন্যদিকে, পার্ক স্ট্রিট, রিপন স্ট্রিট, নিউ আলিপুর, তারাতলায় ব্যক্তিগত গাড়ি, বাইকেও ব্যাপক ভাবে ধড়পাকড় চলছে। যাঁরা গাড়ি নিয়ে বেরচ্ছেন, কিন্তু কোনও কারণ দেখাতে পারছেন না, তাঁদের নাম লিখে রাখা হচ্ছে। অনেক গাড়ি বাজেয়াপ্তও করা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের পদস্থকর্তারাও নেমেছেন পথে। একই রকম ছবি ধরা পড়ছে হাওড়া, দুই ২৪ পরগনাতেও। শ্রীরামপুরে এক আইনভঙ্গকারীকে কান ধরে উঠবস করানো হয়। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরেও বাজার-দোকান একেবারে বন্ধ। প্রতিটি রাস্তায় চলছে পুলিশি টহলদারি। পূর্ব বর্ধমানেও রাস্তা ফাঁকা।