কেরালা সোনা পাচার কাণ্ডের প্রত্যেক অভিযুক্তই জঙ্গী কার্যকলাপে যুক্ত। ওই বিপুল পরিমাণ সোনা ভারতে পাচার হচ্ছিল জঙ্গী সংগঠনকে আর্থিক মদত দেওয়ার লক্ষ্যেই। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি এনআইএ-র। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির এই দাবি পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন বাম সরকারকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। কারণ, ইতিমধ্যেই এই পাচার চক্রে একাধিক প্রথম সারির সরকারি আধিকারিকের নাম জড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, মূল অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশের কললিস্ট ঘেঁটে জানা গিয়েছে, সে নিয়মিত কেরালার এক মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখত।
এনআইএ-র দাবি, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থাকে নাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে জঙ্গীরা। আর সেই উদ্দেশ্যেই মূল দুই অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ এবং সন্দীপ নায়ার কূটনৈতিক চ্যানেলকে কাজে লাগিয়ে ওই বিপুল পরিমাণ সোনা পাচার করছিল। পাচার হওয়া সোনা নানাভাবে জঙ্গীদের আর্থিক সাহায্যের কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। আড়াল থেকে এই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছিল চক্রের পাণ্ডা কে টি রামিজ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের ধারণা, গত এক বছরে অন্তত ২৩০ কেজি সোনা পাচার হয়েছে এই কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে। অন্তত ১৩টি এই রকম কনসাইনমেন্ট আমিরশাহী থেকে ভারতে এসেছে এবং কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকায় সেগুলি চেকিং হয়নি। কয়েকটি ব্যাগে ৭০ কেজি পর্যন্ত সোনা পাচার হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারী আধিকারিকদের।
উল্লেখ্য, কেরালার সোনা পাচার নিয়ে মূল বিতর্কের সুত্রপাত গত ৪ জুলাই। ওইদিন সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে বেআইনিভাবে ৩০ কেজি সোনা কেরলের তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয়। রাজ্যের আবগারি দপ্তর ওই সোনা বাজেয়াপ্ত করে। অভিযোগ ওঠে, কোনও কূটনৈতিক চ্যানেলকে কাজে লাগিয়ে আমিরশাহী থেকে কোটি কোটি টাকা মুল্যের ওই সোনা কেরালায় এনেছে পাচারকারীরা। আর এর সঙ্গে স্বপ্না সুরেশ নামের এক মহিলা এবং সরিথ কুমার নামের এক ব্যক্তি যুক্ত। এরা দুজনেই আগে কেরালায় অবস্থিত সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর কনস্যুলেটে কাজ করতেন। বিরোধীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের তৎকালীন প্রধান সচিব এম শিবশংকরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল পাচারকারীদের। সরকারি মদতেই এই চক্র চলছে কেরালায়। যা রীতিমতো চাপে ফেলে দিয়েছে বিজয়ন সরকারকে। উল্লেখ্য, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ আপাতত এনআইএ হেফাজতে। আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত তাঁর হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে কোচির এক বিশেষ আদালত।