সপ্তাহকয়েক কেটেছে, কিন্তু নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভকে ঠিক তালুবন্দি করতে পারছে না কেন্দ্র। নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ, সকলেই নানা পন্থা আপন করে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাও যেন মন থেকে মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না এই আইন। এমনটাই দাবি বিরোধীদের। দল যে নিজের গড়েই ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে, এবার সেই ইঙ্গিত শোনা গেল আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেয়ালের গলাতেও। সিএএ বিরুদ্ধ প্রচারের ফলে তিনি এখন কোনদিকে যাবেন বুঝতে পারছেন না। এমনটাই খবর সংবাদ মাধ্যম সূত্রে।
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যেখানে যেখানে বিক্ষোভ বা আন্দোলন হচ্ছে, পুরোটাই কংগ্রেস ও বাকি বিরোধীদের উস্কানিতে। জপের মালার মতো বিগত কয়েকদিন ধরে এই লাইন জপেছেন মোদী-শাহ। কিন্তু এই দাবি ক্রমশ ওজন হারাচ্ছে। তা সত্ত্বেও বিজেপি নেতাদের বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে, ‘ওরা ভুল বোঝাচ্ছে, ভুল প্রচার করছে।’ একই কথা বলতে হচ্ছে সর্বানন্দকেও। অর্তির সুরে তাঁকে বলতে হচ্ছে, একঘরে করে দিলে তিনি কোথায় যাবেন। সম্প্রতি অসমের মুখ্যমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমে বলছেন, ‘গত সাড়ে তিন বছরে আমি একটাও আসাম বিরোধী কাজ করিনি। এখন মিথ্যে প্রচারের জেরে আপনারা যদি আমায় একঘরে করে দেন, আমি তাহলে কোথায় যাব?’
ঘটনা হচ্ছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ হওয়ার পর বিক্ষোভ ছড়িয়েছে গোটা দেশে। কিন্তু আসামে এই আইন নিয়ে দীর্ঘদিনের আপত্তি ছিল। আসামের ভূমিপুত্ররা এনআরসি-র পক্ষে সায় দিলেও চিরকাল নাগরিকত্ব আইনের বিপক্ষে ছিলেন। আসামবাসীর স্বার্থ এতে ক্ষুন্ন হবে বলে তারা মনে করেন। কিন্তু সেসব আবেগের তোয়াক্কা না করেই ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে এই আইন লাগু করে কেন্দ্র সরকার। যার বিরোধিতায় জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসে আসামের এনডিএ শরিক অগপ (অসম গণ পরিষদ)।
মুখ্যমন্ত্রী যদিও লাগাতার বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ‘সিএএ, এনআরসি বা আসাম চুক্তি, এতে আসামের কোনও ক্ষতি সম্ভব নয়’। এতে অবশ্য চিঁড়ে ভিজছে না। প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, খোদ বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে গোটা দেশে কীভাবে এই আইন কার্যকর হবে?