কথায় বলে, শিল্প-সাহিত্যের কোনও দেশ-সীমান্ত বা কাঁটাতার হয় না। কিন্তু মোদী জমানায় দেখা গিয়েছে, এ দেশে বারবারই কোপ পড়েছে পাকিস্তানি শিল্পীদের ওপর। এবার ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে দেগে দেওয়ার চেষ্টা চলছে পাকিস্তানের কবি ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজকে। গত কয়েক দশক ধরেই অধিকাংশ বিক্ষোভ মিছিলে ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজের ‘হম দেখেঙ্গে’ গানটি গাওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ দাবি করেছেন, গানটি হিন্দুবিরোধী। সত্যিই ওই গানে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত লাগার মতো কিছু আছে কিনা, এবার তা নিয়ে তদন্ত শুরু করে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কানপুর আইআইটি।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ডিসেম্বর জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যে পুলিশি অভিযান হয়, তারপরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষায়তনের ছাত্রছাত্রীরা ‘পুলিশি দমনপীড়নের’ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই পথ ধরে ১৭ ডিসেম্বর কানপুর আইআইটিতে একদল ছাত্রছাত্রী জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সমর্থনে মিছিল বার করেন। ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজের ‘হম দেখেঙ্গে’ কবিতাটিও পাঠ করেন তাঁরা। ওই কবিতা পাঠের ছবি ধরা পড়েছিল ক্যামেরায়। যা দেখার পর কানপুর আইআইটি-র ডেপুটি ডায়রেক্টর মণীন্দ্র আগরওয়াল বলেন, ‘ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজকে কে চেনে?’ পরে তিনি বলেন, ‘ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে ওই কবিতায় হিন্দুদের ভাবাবেগ আহত হতে পারে।’
বিক্ষোভ মিছিলের বিরুদ্ধে আইআইটি-র জনৈক শিক্ষক অভিযোগ করেন। সে বিষয়ে তদন্ত করার জন্য কমিটি তৈরি হয়। সেই কমিটি তদন্ত করবে তিনটি বিষয়ে। প্রথমত, ছাত্ররা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মিছিল বার করেছিল কিনা। দ্বিতীয়ত, মিছিলের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবাঞ্ছিত কিছু পোস্ট করা হয়েছিল কিনা। তৃতীয়ত ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজের কবিতাটি হিন্দুবিরোধী কিনা। ছাত্ররা জানিয়েছে, মিছিল শুরুর অল্প আগে আচমকাই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আগে সবাইকে খবর দেওয়া হয়েছিল। তাই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মিছিল বার করা হয়। তবে এই বিষয়টিকে ছাপিয়ে গিয়েছে হঠাৎ ফৈয়াজ আহমেদ ফৈয়াজের ‘হম দেখেঙ্গে’ কবিতাটিকে হিন্দুবিরোধী বলে দেগে দেওয়ার চেষ্টা। যা নিয়ে দানা বাঁধছে বিতর্ক।