কথায় আছে, ‘যেচে বাঁশ নেওয়া’। এবার ঠিক এমনটাই ঘটল বিজেপির ‘বীরপুঙ্গব’দের সঙ্গে। এনআরসি-সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যখন উত্তাল গোটা দেশ। স্বতস্ফূর্তভাবে দলে দলে পথে নামছেন মানুষ, তখন নাগরিকত্ব আইনের ভাল দিক কী কী, তাই সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন বিজেপির নেতারা। আর তা করতে গিয়েই সেইসব মানুষের হাতে মারধর খেলেন ওই বিজেপি নেতারা।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার মুসলিম অধ্যুষিত লাক্কাদা এলাকায়। শুক্রবার নাগরিকত্ব আইনের কী কী ভাল ও সুবিধাজনক দিক রয়েছে, লাক্কাদা এলাকার বাসিন্দাদের তা বোঝাতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। জানা গেছে, সেই সময়ই খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে চড়াও হন ওই নেতাদের ওপর। শেষমেশ কোনও রকমে এলাকা ছেড়ে পালান ওই নেতারা। গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এই ঘটনায়।
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশজুড়ে। সবচেয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি উত্তরপ্রদেশে। অন্তত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন পুলিশের গুলিতে। বিক্ষোভে-বিদ্রোহে পথে নেমেছে সমস্ত বিরোধী দল, ছাত্রসমাজ, সাধারণ মানুষ। বিজেপির কিছু শরিক দলও এই আইনের বিরোধিতা করেছে। ফলে সব মিলিয়ে ঘরে-বাইরে চাপে পড়েছে বিজেপি।
এর পরেই দলের অভ্যন্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, স্থানীয় মানুষদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নাগরিকত্ব আইনের ভাল দিকগুলি বোঝানো হবে। সেইমতো শুক্রবার থেকে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেরিয়ে নাগরিকত্ব আইন বোঝানোর কর্মসূচী শুরু করে বিজেপি। মুসলিম অধ্যুষিত লাক্কাদা এলাকায় যান বিজেপির জেলা সম্পাদক মূর্তাজা আগা কোয়াজমি।
বিভিন্ন মানুষের বাড়ি গিয়ে তিনি বোঝাতে শুরু করেন, নাগরিকত্ব আইনে কারও অধিকার খর্ব করবে না, বরং শরনার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এই সব শুনেই খেপে যান সকলে। তখনই কোয়াজমির ওপর আক্রমণ করেন একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা। এর থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, সিএএ নিয়ে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষোভ জমা হয়েছে যোগীরাজ্যের বাসিন্দাদের মধ্যে।