বাংলার গ্রামীণ স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সদা তৎপর রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গ্রামীণ স্বাস্থ্যের উন্নতিতে আরও চার হাজার উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হলে, রাজ্যের সমস্ত গ্রামীণ এলাকাতেই পাঁচ হাজার মানুষ পিছু একটি করে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকবে। প্রাথমিক স্তরের অসুখ-বিসুখ জ্বরজ্বালা, পেটের অসুখ ইত্যাদিতে কথায় কথায় দীর্ঘ পথ ভেঙে ব্লক প্রাথমিক হাসপাতাল বা মহকুমা বা জেলা হাসপাতালে ছুটতে হবে না সাধারণ মানুষকে।
উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার দফতরের এক শীর্ষ সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যভবন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে আর্থিক অনুমোদনের জন্য ফাইল পাঠিয়েছে অর্থ দফতরে। তা চলে এলে পরবর্তী কাজকর্ম এগবে।
গোটা বিষয়ে রাজ্যের তৃণমূলপন্থী চিকিৎসক সংগঠন প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (পিডিএ)-এর রাজ্য সভাপতি ডাঃ নির্মল মাজি বলেন, ‘হ্যাঁ, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। আর্থিক অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব গিয়েছে। অসাধারণ সিদ্ধান্ত’।
ডাঃ নির্মল মাজি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, “ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই আট বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যা করেছেন, দেশের অন্য কোনও রাজ্যই তা করতে পারেনি, হলফ করে বলতে পারি”।
বর্তমানে রাজ্যে গ্রামীণ এলাকার জনসংখ্যা কমবেশি সাত কোটি। দফতর সূত্রের খবর, গ্রামীণ এলাকায় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে ১০ হাজার ৩৫৭টি। সুতরাং কোথাও কোথাও ১০-১৫ হাজার মানুষের চাপও নিতে হচ্ছে কোনও কোনও উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে। ফলে নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা কর্মীদের। সাধারণ মানুষও ঠিকঠাক পরিষেবা পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আরও চার হাজার উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র করতে পারলে জনসংখ্যা পিছু অনুপাতও ঠিক থাকবে। পরিষেবার মানও বাড়বে।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিই রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। কারণ, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, বাচ্চার সার্বিক টিকাকরণ, ডটস-এর ওষুধ, ডায়ারিয়া নিবারণ কর্মসূচি, যক্ষ্মার ওষুধ, নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কর্মসূচি বা সুগার, প্রেসার, ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ ধরে চিহ্নিতকরণ, ডেঙ্গু এবং বিভিন্ন মশাবাহিত রোগ নিরাময়, পরিবার পরিকল্পনা সহ অজস্র কাজের দায়িত্ব রয়েছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির উপর। তাই আরও বাড়তি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হলে সাধারণের উপকার হবে।