কলকাতা : জনসাধারণের সুবিধার্থে জলপরিবহণকে ঢেলে সাজাতে ইতিমধ্যেই একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার নামানো হচ্ছে ১৩টি পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক জলযান।(Eco-Friendly Watercraft) সেই জলযান তৈরির কাজই বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করল গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স। বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় পরিবহণ দফতরের তরফে এই ই-ভেসেলগুলো নামানো হবে। তাতে রাজ্যের মোট ব্যয় হবে ২৪০ কোটি টাকা।
Read More: ভারতের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ! ‘বন্ধু’ তাজিকিস্তানের কাছে নালিশ শাহবাজের
রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সাতটি ভেসেল থাকছে যেগুলিতে ১০০ জন যাত্রী চড়তে পারবেন।(Eco-Friendly Watercraft) আর ৬টি দ্বিতল ভেসেল বানানো হবে, যেগুলিতে ২০০ জন যাত্রীধারণ ক্ষমতা থাকবে। জলযান তৈরির কাজ শুরু উপলক্ষে গার্ডেনরিচে এদিন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, রাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল, গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর কমোডর পিআর হরি, ডব্লুবিটিসি-র এমডি শিরাজ ধানেশ্বর-সহ শিপ বিল্ডার্সের কর্তারা।
গত ২০২৪-এর ১৯ নভেম্বর, রাজ্য পরিবহণ দফতরের সঙ্গে ১৩টি হাইব্রিড ফেরি ডিজাইন ও নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স। আর সেই কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে এদিন থেকে শুরু হল। এই নৌযানগুলির কাঠামো হবে ক্যাটামেরন ধাঁচের এবং নির্মাণে ব্যবহৃত হবে অ্যালুমিনিয়াম ও ফাইবার রিইনফোর্সড পলিমার। এই হাইব্রিড ফেরিগুলি ব্যাটারি ও ডিজেল উভয়ের দ্বারাই চলবে। ফলে অপারেটররা প্রয়োজনে দু’টি মোডের মধ্যে বদল ঘটাতে পারবেন, যা নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে। এর আগে গার্ডেনরিচ বৈদ্যুতিক জলযান ‘ঢেউ’ তৈরি করেছিল। যেটি এখন বর্তমানে কলকাতা থেকে বেলুড় মঠ পর্যন্ত চলাচল করছে। দোতলা নৌযানগুলির দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৩০ মিটার এবং প্রস্থ ৮-১০ মিটার হবে। সর্বাধিক গতি থাকবে ঘণ্টায় ১২ কিমি। প্রতিটিতে প্রয়োজন হবে ৫ জন ক্রু সদস্যের।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1928418528786256171
পাশাপাশি, উক্ত ৬টি ফেরির আনুমানিক নির্মাণ ব্যয় হবে ১২৬ কোটি টাকা। বাকি ৭টি ফেরিতে থাকবে একটি করে ডেক এবং প্রতিটির যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১০০ জন। ফেরিগুলির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ মিটার ও প্রস্থ ৮ মিটার এবং সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৯ কিমি। এগুলোতেও থাকবে ৫ জন ক্রু সদস্য। এই ৭টি ফেরির জন্য মোট আনুমানিক খরচ হবে ১০০ কোটি টাকার বেশি। চুক্তি অনুযায়ী, এই হাইব্রিড ফেরিগুলি ত্রিবেণী থেকে ডায়মন্ডহারবারের মধ্যে বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহণ করবে।
এপ্রসঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘‘১৩টি হাইব্রিড ফেরি তৈরি করতে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সকে বরাত দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দেশের অন্যান্য রাজ্যও বাংলার এই পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে অনুসরণ করবে।’’ সংস্থার চেয়ারম্যান পি আর হরি শিপইয়ার্ডের সাম্প্রতিক সাফল্য এবং বৃহত্তর জাহাজ নির্মাণে সবুজ প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। “আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবেশবান্ধব উদ্যোগে নেতৃত্ব দিতে পেরে গর্বিত এবং আমি আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা উচ্চমানের জাহাজ নির্মাণের মাধ্যমে সামুদ্রিক খাতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারব”, জানান তিনি।